ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে নকলা উপজেলার চর অষ্টধর ইউনিয়নের নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা ও ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনরোধে প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দাবিতে তারা মানববন্ধনও করেছেন।
জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তরপাড়ের ভাঙনে ইতোমধ্যে নারায়নখোলা দক্ষিণ গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৫শ একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সেসঙ্গে বিলীন হয়েছে হাজার হাজার গাছ-পালা, ৫ শতাধিক ঘরবাড়িসহ ২ টি মসজিদ ও খেলার মাঠ। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েকশ পরিবার। ভাঙনের কবলে থাকা নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন একতলা পাকা ভবনটি দুবছর আগে নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বিদ্যালয়ের পাঠ দান চলছে একটি পরিত্যক্ত আধা পাকা ঘরে। সেটিও নদীগর্ভে বিলীনের পথে। এটি বিলীন হয়ে গেলে এলাকায় সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা।
নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মুশফিকা খাতুন বলেন, বিদ্যালয়টি নদীত চলে গেলে আমার পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে যাবে। দূরের কোনো বিদ্যালয়ে যেয়ে আমার আর পড়ালেখা হবে না।
অভিভাবক জুলহাস মিয়া বলেন, বিদ্যালয়টি নদীত চলে গেলে আমার পক্ষে দূরের কোনো বিদ্যালয়ে নিয়ে মেয়েটিকে পড়ানো সম্ভব হবে না।
নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামছুন নাহার বলেন, ভাঙনকবলিত বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটি নিলামে বিক্রির পর থেকে পরিত্যক্ত পুরোনো আধপাকা ঘরে শ্রেণি পাঠ চলছে। বিষয়টি বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর পরও কোনো সুব্যবস্থা হচ্ছে না।
স্থানীয় কৃষক আবদুল্লাহ বলেন, গত ৫ বছর আগে আমার বাবা মারা যাওয়ার পর তাকে বাড়ির পাশে কবর দিয়েছি, এখন ব্রহ্মপুত্র নদর ভাঙন যেভাবে বাড়ছে তাতে বাবার কবরটিকে হয়তো শেষ রক্ষা করতে পারবো না।
এ বিষয়ে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।