অতি জোয়ারের পানিতে ফেরিঘাট প্লাবিত হয়ে দুই দিন ধরে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাট এলাকায় শতাধিক পন্যবাহী গাড়ী আটকা পড়ে আছে। ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে ট্রাক চালক ও যাত্রীদের।
জানাগেছে,লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুট হয়ে লক্ষ্মীপুরসহ দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চ ঘাটটি চালু করেন সরকার। ওই সময় কামিনী, কিষানী ও কস্তুরী নামের তিনটি ফেরি এ নৌপথে চলাচল করত। এরপর বিআইডব্লিওটিএ কামিনি ও কস্তুরি নামের ২টি ফেরি প্রত্যাহর করে নেয়।বর্তমানে কদম, কুশমকলী,কনকচাপাঁ ও কিষাণী নামে চারটি ফেরি এ রুটে রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ফেরি চলাচল করলেও ইলিশা ফেরিঘাটে একটি হাই ওয়াটার ও একটি লোওয়াটার ঘাট থাকলেও নিন্ম চাপের প্রভাবে অতি জোয়ারে মেঘনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২ দিন দুপুর হলেই ঘাট দুটি তলিয়ে রয়েছে। ফেরির পন্টুন ও গ্যাঙওয়ে ডুবে যাওয়ার ফলে ফেরিতে উঠানামা করতে পারছে না যানবাহন বলছেন ট্রাক ও পন্যবাহী গাড়ী চালকরা। তারা আরো জানান,ঘাটের দু-পাড়ে আটকা পড়েছে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যানবাহনের চালকদের।
ভোলা গ্রামী ট্রাক চালক জুনাহিদ ফরাজি জানান, তিনি চট্রগাম থেকে পন্য নিয়ে ভোলার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। গত ২দিন ধরে তিনি ঘাটে আটকে রয়েছেন। বলছেন তাকে ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন সৃষ্ট নি¤œচাপের প্রভাবে ফেরির গ্যাঙওয়ে ডুবে যাওয়ায় ফেরি চলাচল করতে পারছে না। লক্ষ্মীপুর ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে ছেড়ে যাওয়া ফেরিগুলো পানির কারণে তীরে নামতে পারছে না। এ কারণে এখানে ফেরি এসে পানি বৃদ্ধিতে ফেরিতে করে গাড়ী পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।
ট্রাক চালক জাহাঙ্গীর মাঝী টেলিফোনে জানান, তিনি ফেরিতে ট্রাক নিয়ে রয়েছেন নদীতে। গত দুই দিন ধরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোলায় পৌছে তিনি আটকে রয়েছেন। মানি নেমে গেলে ট্রাক নামাবেন তিনি।
আপ চালক সবুজ গাজী জানান,তিনি ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাকে কাঁচামাল নিয়ে আটকে আছেন লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট ঘাটে। খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তবুও সিরিয়াল পাচ্ছে না তিনি। তিনি আরো জানান, তার মতো অকেট ছোট যাববাহন চালক রয়েছেন ঘাটে আটকে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। তবুও সিরিয়াল পাচেছনা তারা। এ ছাড়া একই সমস্যাসহ সঠিক সময়ে গন্তব্যে না পৌছাঁয় সীমাহীন দূভোর্গে পড়তে হয়েছে অভিযোগ করেন চালকরা।
তাদের অভিযোগ, চলাচল শুরু হলে আবার ফেরিতে উঠতে এমনকি নতুন করে সিরিয়াল নিতে যানবাহন চালককে দিতে অর্থ। আর টাকা না দিলে দিনের পর দিন পন্যবাহী যানবাহন ঘাটে আটকে থাকতে হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিআইডব্লিউটিসির লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের দায়িত্বরত ভোলা মেরিন অফিসার মোঃ আল আমিন জানান,বুধবার দুপুর থেকে অতি জোয়ারে ফেরিঘাটের গ্যাঙওয়ে ডুবে যায়। লক্ষ্মীপুর ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোর যানবাহন জোয়ারের পানির কারণে তীরে নামতে পারছে না।
এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ইলিশা ফেরিঘাটে তিন থেকে চার ফুট পানি উঠে ঘাটগুলো তলিয়ে গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সাময়িকভাবে ফেরিচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি কমেগেলে ফেরি চলাচর স্বাভাবিক করা হবে।