রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাসিন্দা সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত বান্দরবানে কর্মরত সেনা সদস্য শিমুল আহমেদ (২৮) এর লাশের দাফন সম্পূন্ন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। লাশ আসার পর শত শত মানুষকে আহাজারি করতে দেখা যায়।
মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) বিকেল ৪টার দিকে বান্দরবানের থানচি-আলীকদম এলাকায় জিপ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন। শিমুল আহমেদ বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ঝিনা মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের তায়েদ আলীর ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিমুল আহমেদ ২০১৪ সালের জুলাই মাসে সেনা সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। তিনি দয়ারামপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বদলি হয়ে ঈদের পরে বান্দরবানের রামু সেনা ক্যাম্পে যোগদান করেন। মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর জিপ গাড়িতে আরও তিনজন সদস্যের সাথে থানচি-আলীকদম অভ্যন্তরীণ সড়কের ২৮ কিলোমিটার এলাকায় থানচি যাওয়ার পথে সেনাবাহিনীর একটি জিপ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন।
শিমুল আহমেদ বিবাহিত। তার স্ত্রী জ্যামি খাতুন তিন মাসের অন্তসত্বা। স্বর্ণালী খাতুন নামে ৫ বছরের তার একটি মেয়ে রয়েছে। মা পপি বেগম গৃহীনি। ছোট ভাই সোহাগ আহমেদ তার বাবার সাথে কৃষি কাজ করেন। ছোট বোন তামান্না খাতুন তন্নি স্থানীয় স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। তিনি ২০১০ সালে এসএসসি পাশ করেন। রামু ক্যাম্পে বুধবার (১৭ আগষ্ট) বিকাল ৩টায় তার প্রথম জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ বাড়িতে লাশবাহি গাড়িতে যোগে আনা হয়।
শিমুলের আগামী মাসে মিশনে যাওয়া কথা রয়েছিল। তার বাবা-মা, ভাই-বোন স্ত্রী নিজ গ্রামে কাঁচা বাড়িতে বসবাস করেন। দুইদিন আগে তার মাকে বলেছিলেন তোমাদের আর কাাঁচা বাড়িতে থাকতে হবে না। মিশন থেকে ফিরে এসে গ্রামে সুন্দর একটি বাড়ি দিব। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হলোনা শিমুলের ও তার পরিবারের।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে তার বাড়িতে গেলে দেখা যায়, শিমুলের মা পপি বেগমকে নিয়ে শত শত মানুষ ঘিরে আহাজারি করছে।
এ বিষয়ে শিমুলের মামা আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ঝিনা গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বর ও ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, রামু ক্যাম্পে প্রথম জানাজা শেষে লামবাহি গাড়ি যোগে সেনাবাহিনীর নিজ দায়িত্বে বাড়িতে পৌছে দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে দাফন করেন।