দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট অষ্টম দিনে গড়ায় শনিবার। দেশের ১৬৭টি চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে না গিয়ে নিজ নিজ এলাকায় সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে ধর্মঘটের কারণে বাগানে চা পাতা তোলা বন্ধ থাকায় চা উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে। ১৩ আগস্ট থেকে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকরা। মজুরি বাড়ানোর জন্য বাগান মালিক কর্তৃপক্ষ, মজুরি বোর্ড, চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকের পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় ধর্মঘট অব্যাহত আছে। শনিবার সকালে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার চন্ডিছড়া চা বাগানে দেখা যায়, কয়েকশ’ শ্রমিক বাগানের সড়কে বসে স্লোগান দিচ্ছেন। শ্রমিকদের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। শ্রমিকরা বলেন, মালিকপক্ষ আমাদের ১৪০ টাকা দিতে চায়। আমরা সেটা নেব না। দরকার হলে আমরা না খেয়ে থাকব। যতদিন আমাদের দাবি পূরণ না হয়, ততদিন আমরা চা বাগানের কাজে যোগ দেব না। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা নৃপেন পাল বলেন, আন্দোলন শুরুর পর থেকে বাগান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদের রেশনসহ সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রেখেছে। শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। দাবি আদায় না হলে আন্দোলন থামবে না।
অন্যদিকে সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন চা শ্রমিকরা। শনিবার সকাল ১১টার দিকে সড়কটি অবরোধ করেন তারা। এতে সড়কের দুই পাশে কয়েক’শ গাড়ি আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। গত ১৩ আগস্ট থেকে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকরা। মজুরি বাড়ানোর জন্য বাগান মালিক কর্তৃপক্ষ, মজুরি বোর্ড, চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের দুই দফা বৈঠকের পরও দাবি পূরণ না হওয়ায় ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন তারা। এদিকে শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় সভা সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল চালিয়ে যাচ্ছেন। ধর্মঘটের কারণে বাগানে চা-পাতা তোলা বন্ধ থাকায় চা উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বাগান মালিকদের। শনিবার সকালে সিলেটের লাক্কাতুরা, মালনীছড়া, হিলুয়াছড়া, খাদিম চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশো শ্রমিক বাগানের সড়কে বসে স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠছে বাগান এলাকা। চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালীর সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, মালিকপক্ষ আমাদের ১৪০ টাকা দিতে চায়। আমরা সেটা নেব না। দরকার হলে আমরা না খেয়ে থাকব। যত দিন আমাদের দাবি পূরণ না হয়, সে পর্যন্ত আমরা চা বাগানের কাজে যোগ দেব না। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা নৃপেন পাল বলেন, ‘আন্দোলন শুরুর পর থেকে বাগান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদের রেশনসহ সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রেখেছে। শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবুও দাবি আদায় না হলে আন্দোলন থামবে না। শনিবার সকাল থেকে সিলেট তামাবিল সড়কের খাদিম এলাকায় অবস্থান নেন চা শ্রমিকরা। হযরত শাহপরান (রহ.) থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা করছে।