রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের জনগণ এখন থেকে কোতোয়ালি থানার অধিনে সেবা নেবে। সদরের চারটি ইউনিয়ন নিয়ে ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র কোতোয়ালি থানার কার্যক্রম শুরু হয়। ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত রংপুর সদর থানার আয়তন ১৪৭.০৪ বর্গ কিঃমিঃ। মোট জনসংখ্যা প্রায় ২লাখ ৪০ হাজার। গ্রাম ৫৮টি। এতে বাদ পড়ে খলেয়া ইউনিয়ন। তাদের সেবা নিতে যেতে হত গংগাচড়ায়। সম্প্রতি গত ২৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা শাখা-১ এর সিনিয়র সহকারী সচিব মমতাজ বেগম স্বাক্ষরিত এক আদেশে রংপুর সদর উপজেলার আইন শৃঙ্খলা (থানা), শিক্ষা (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক), স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা এবং সমাজসেবার কার্যক্রম গংগাচড়া উপজেলার পরিবর্তে সদর উপজেলায় পরিচালনার জন্য গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এ খবরে খলেয়া ইউনিয়নের জনগণের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ দিনের দাবি আদায় হওয়ায় তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। নিয়েছে আনন্দ উদযাপনের কর্মসূচী। এ ব্যাপারে কথা হলে তিনবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি দাবিটি মেনে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। এ আনন্দ প্রকাশ করার মতো নয়। স্মরণ রাখা উচিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ঘোষণার আগে সদর উপজেলা পাঁচটি ইউনিয়নকে মেট্রোপলিটন পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন থানায় অর্ন্তভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পরে নতুন করে সদরের পাঁচটি ইউনিয়নকে মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে বের করে দিয়ে পার্শ্ববর্তী থানা গুলোতে সংযুক্ত করে দেয়ার চেষ্টা চলে। খলেয়া ইউনিয়নকে গংগাচড়া থানার অধিনে। হরিদেবপুর ও মমিনপুর ইউনিয়নকে তারাগঞ্জ থানায় এবং চন্দনপাট ও সদ্যপুস্করিনি ইউনিয়নকে বদরগঞ্জ থানায় যুক্ত করা হয়। মানে প্রশাসন চলবে সদর উপজেলায় আইনি সহায়তা চলবে ভিন্ন ভিন্ন থানায়। এ সংকট দেখে শংকিত হয়ে উঠেছিলাম। স্বতন্ত্র থানা করার দাবিতে ছুটে যাই ঢাকায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সি এমপির পরামর্শে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর সাথে দেখা করে সদরের জন্য স্বতন্ত্র থানা প্রতিষ্ঠার দাবি জানাই। দাবিটি জনগুরুত্বপূর্ন হওয়ায় মেনে নিয়ে সদরের জন্য স্বতন্ত্র থানা চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন দুই মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী। গত ৯ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয় সদর কোতোয়ালি থানা স্থাপনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এরপর ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর হরিদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে টিপু মুন্সি এমপি, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি রংপুর রেঞ্জ ও রংপুরের পুলিশ সুপারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অস্থায়ী সদর কোতোয়ালি থানার আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আজ খলেয়া ইউনিয়ন সেখানে অর্ন্তভুক্ত হলো। এটি বড় প্রাপ্তি। খলেয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোত্তালেবুল হক বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এটি হওয়ায় আমি আনন্দিত। খলেয়া ইউনিয়নের জনগণের কাছে বিরাট পাওয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিনবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা জামান ববিসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর নাহার বেগম বলেন, খলেয়া বাসীর জন্য সত্যিই এটি পরম পাওয়া। তাদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এখন আমাদের কাজের ব্যপ্তি আরো বেড়ে যাবে। আমার থানার দরজা সকলের জন্য উম্মুক্ত। নাগরিকদের জান-মাল হেফাজত ও নাগরিক নিরাপত্তা দিতে আমার কোন কুন্ঠাবোধ নেই। খলেয়া ইউনিয়নেকে পূর্নাঙ্গ সদর উপজেলার অন্তভুক্ত করায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, রংপুর সদর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মহিউদ্দিন মখদুমী, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মিলন আল মামুন, প্রমুখ।