নোয়াখালীর সেনবাগে বিভাগী ও জেলা নেতাদের ইন্দনে বিএনপির একাধিক গ্রুপের বিভক্ত হয়ে রাজনীতি করা ও ভুল সিন্ধান্তে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মামলা হামলার শিকার হয়ে ঘর বাড়ি ছাড়া হাজার হাজার নিরিহ দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। পুলিশী গ্রেফতার ও হয়রানির শিকার হয়ে এলাকা ছাড়া বিএনপি,যুবদল,ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেকব দলের কর্মী সমর্থক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হাইকোট থেকে জামিন পেলেও বেকাদায় মামলার অজ্ঞাত আসামিরা।
কেন্দ্রে সিন্ধান্ত মোতাবেক জেলা কর্তৃক ঘোষনা করা নিদিষ্ট তারিখে কর্মসূচি পালন করতে ব্যার্থ হওয়া ও ভুল সিন্ধান্তে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে নিদিষ্ট গ্রুপের বাহিরে নেতাকর্মীদের নামে মামলার কারণে সেনবাগ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষনা দাবী ওঠেছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সামাাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে আলোচনা সমালোচনা ঝড় বইছে।
সেনবাগের সাবেক এমপি ও সাবেক বিরোধীদলীয় চীফহুইপ এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক গ্রুপের অনুসারি আহব্য়াক কমিটিতে স্থান পাওযা নেতা ও কাজী মফিজ গ্রুপের অনুসারিদের মধ্য থেকেও আহব্য়াক কমিটি বাতিল করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা দাবী জানিয়েছেন অনেকে।
সেনবাগে বিএনপির ৫টি গ্রুপ আলাদা আলাদা ভাবে রাজনীতি করছে। গ্রুপ গুলো হচ্ছে ঃ সেনবাগের সাবেক এমপি সাবেক বিরোধীদলীয় চীফহুইপ এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক গ্রুপ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং বিএনপি জাতীয় নিবাহী কমিটি সদস্য কাজী মফিজুর রহমান গ্রুপ, সেনবাগ পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলাম লিটন গ্রুপ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাহার চেয়ারম্যান গ্রুপ, সেনবাগ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ গ্রুপ ও সৌদি আরব বিএনপি নেতা আবদুল মান্নান গ্রুপ।
সম্প্রতি বিএনপি তেল,গ্যাস,বিদ্যুৎ,দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও গুম, খুনের প্রতিবাদে দেশীব্যাপী কেন্দ্র থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়। ওই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে জেলা থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চীফহুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানকে প্রধান করে ২৭ আগস্ট বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে। যার আলোকে ফারুক গ্রুপ, মফিজ গ্রুপ ও লিটন গ্রুপের নেতারা সম্মিলিত ভাবে ২৭ তারিখে সেনবাগ উপজেলা সদরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে ঐকমত্য হন। কিন্তু ওই ঐক্যমতের ১২ঘন্টার মাথায় ঐক্য ভেঙ্গে যায়। তারা একই দিন আলাদা কর্মসূচি পালনের সিন্ধান্ত নেন। এরেই মধ্যে সেনবাগ উপজেলা যুবলীগ একই দিন ও একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষনা করে। জয়নুল আবদিন ফারুক গ্রুপ ঘোষিত কর্মসূচি পালনে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করে প্রচারণা চালায়। কিন্তু যুবলীগের ঘোষিত কর্মসূচির কারণে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে তারা শহর থেকে দুরে নোয়াখালী-ফেনী মহাসড়কের আজিজপুর পোলের গোড়ায় শান্তিপূর্ন ভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে।
কিন্তু কাজী মফিজ গ্রুপ ওই দিন বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবাদ সভা না করে সোমবার ২৯ আগস্ট সেনবাগ সোনাইমুড়ি সড়কের ডমুরুয়া চৌ-মোড় সংলগ্ন কাজী মফিজের মালিকানাধীন ইটভায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আহবান করেন। কিন্তু একইদিন সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহব্য়াক ও স্থানীয় ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের চেযারম্যান শওকত হোসেন কাননেন নেতৃত্বে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক।
বিকেলে উভয় গ্রুপ বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিএনপির কাজী মফিজ গ্রুপের মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর,পুলিশের ওপর হামলা এবং দলীয় কার্যালয়,বসত বাড়িতে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ওই হামলা ভাংচুর ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ডমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাখাওয়াত হোসেন প্রকাশ উজ্জ্বল বাদী হয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২২৩ জনের নাম ঊল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩৫০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।
এছাড়াও সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান,জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান সহ ২২৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪০০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করে মামলা দয়ের করে। মামলা দায়েরর পর থেকে ২৪ নেতকর্মী গ্রেফতার হয়েছে।
ইতিমধ্যে ১ সেপ্টেম্বর হাইকোট থেকে আওয়ামী লীগের দায়ের করা মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা ৬সপ্তাহের আগাম জামিন পেলেও বেকাদায় পড়েছে বিএনপির নিরিহ কর্মী সমর্থকরা। মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসাবে পুলিশ গনহারে গ্রেফতার করায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কর্মী সমর্থক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে তারা গ্রেফতার এড়াতে গা ডাকা দিয়েছে। এতে করে সেনবাগে বিএনপি,যুবদল,ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেবকদল সহ সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া হয়ে পড়েছে।
বিএনপির জয়নুল আবদিন ফারুক গ্রুপের অনুসারি সেনবাগ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিন উল্লাহ বিএসসি বলেন বিভাগ ও জেলা নেতাদের ইন্দনে কাজী মফিজ গ্রুপ ভুল রাজনৈতিক সিন্ধান্তে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা ভাংচুর ও পুলিশের হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংঘঠনের নেতাকর্মী হয়রানির শিকার হচ্ছে। অভিলম্বে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করে নতুন করে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার দাবী জানান।
কোন গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় দায়ের কার দুইটি মামলার আসামি সেনবাগ পৌরসভা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারী ফারুক বাবুল বলে আন্দোলন সবে মাত্র শুরু হয়েছে। শুরুতে ভুল রাজনৈতিক সিন্ধান্ত নিয়ে আন্দোলন মুখি নেতাকর্মীদের মামলা হামলায় জড়ােেনার প্রতিবাদ জানান তিন।