নাটোরের লালপুরে বিএনপি'র বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীর নামে বে-নামে মামলা ও ধরপাকড়ের ঘটনায় নিন্দা ও মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দ্রব্যমূ্ল্েযর ঊর্ধ্বগতি ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের সময় মঙ্গলবার ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের কন্যা বিএনপি নেত্রী ফারজানা শারমিন পুতুলকে প্রধান আসামি করে ৫৮ জন ও অজ্ঞাত আরো ২শ থেকে ৩শ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয় পুলিশ।
এঘটনায় দেয়া বিএনপি'র সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বুধবার মির্জা ফখরুল বলেন, লালপুরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নৃশংস হামলা ও গুলি চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করলেও উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে উল্টো বিএনপি নেত্রী পুতুলসহ ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন, হারুনার রশিদ পাপ্পু, গোলাম মোস্তফা তুহিন ও রহিম নেওয়াজসহ ৩ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং আহত নেতাকর্মীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।এমামলায় পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই
উপজেলা যুবদল নেতা গোলাম মোস্তফা তুহিন (৪২), ২নং ঈশ্বরদী ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ সভাপতি নেতা মহির উদ্দীন (৪৫) কে ও বুধবার রাতে উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মানজুরুল ইসলাম মিলন (২২) কে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
উল্লেখ্য- জ্বালানি তেল সহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে নাটোরের লালপুর উপজেলা বিএনপি মঙ্গলবার ৬ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয়। ওইদিন পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ করে বিএনপির কর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিল নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। হঠাৎ গৌরীপুর-ঈশ্বরদী রোডে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির কর্মীরা ইটপাটকেল ও পাথর ছুড়তে থাকে। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকজন বিএনপি কর্মী আহত হন। অন্যদিকে বিক্ষোভ সমাবেশ প্রতিহত করতে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা।
লালপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব হারুন অর রশীদ পাপ্পু জানান, মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গৌরীপুরে ওই বিক্ষোভে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। একটি মিছিল পালিদহ এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় আবদুল মজিদ ও আমির হোসেনসহ তাদের ১২ নেতাকর্মী আহত হন।
এ বিষয়ে লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান জানান, বিএনপি কর্মীরা হাতে লাঠি নিয়ে বিক্ষোভে যাচ্ছিল। হঠাৎ তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ২টি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় লালপুর থানায় মামলা হয়েছে। এমামলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।