টাঙ্গাইলে গ্রীণ বাংলা ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি বেসরকারি সংস্থা স্থানীয় নারীদের প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। সম্প্রতি শহরের সাবালিয়াস্থ ময়মনসিংহ রোডে অবস্থিত চারতলা বিশিষ্ট ভবনের চতুর্থ তলায় গ্রীণ বাংলা ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রম শুরু করে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে জনৈক রাসেল মিয়া নামের এক ব্যক্তি একক মালিকানাধীন গ্রীণ বাংলা ট্রেনিং সেন্টারটি চলতি বছরের ২৩ আগস্ট ময়মনসিংহ সড়কের চারতলায় অফিস ভাড়া নেয়। তারা কর্মী নিয়োগ ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় প্রায় দেড়শ' নারীকে প্রশিক্ষণের নামে প্রথমে ৭০০ ও পরে ২৫০ টাকা হারে টাকা নিয়ে পালিয়েছে।
সনদপত্র এবং সেলাই মেশিন দেওয়াসহ নানা প্রতিশ্রুতি এবং শর্ত দিয়ে নারীদের প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি করা হয়। জামানত ছাড়া ঋণ দেওয়ার কথা বলে তারা জনপ্রতি ৪-৫ হাজার টাকা নিয়েছেন।
প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হওয়া বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগী নারীরা জানান, গ্রীণ বাংলা ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি সংস্থা দর্জি, বস্নক, বুটিক ও মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল। তিন মাসের প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তির আবেদন ফরম বাবদ প্রথমে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৭০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। পরে তারা ভর্তি ফি বাবদ আরও ২৫০ টাকা হারে তাদের কাছ থেকে নিয়েছে।
তারা প্রায় দেড়শ' নারী ওই প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি হন। এ ছাড়া জামানত ছাড়া ঋণ দেওয়ার কথা বলে তারা ৪-৫ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। সপ্তাহে শুক্র ও রোববার দু'দিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে সংস্থাটির কর্মকর্তারা দু'দিন প্রদশর্নীমূলক প্রশিক্ষণ নেন। ওই দুইদিন প্রশিক্ষণের পর থেকে তাদের আর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এমনকি তাদের একাধিক মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তারা কল রিসিভ করেননি।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে নারীরা দলবেঁধে ওই অফিসে ভির করেন এবং তাদের সাথে প্রতারণার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ সময় টাঙ্গাইল সদর মডেল থানা পুলিশ ওই অফিসের ৪-৫ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর জানান, নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করায় ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। নাম-ঠিকানা ও কাজের ধরণ যাচাই-বাছাই না করে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যদি প্রতারণার কোন অভিযোগ থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টাঙ্গাইল সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম জানান, গ্রীণ বাংলা ট্রেনিং সেন্টারের মালিক বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। সংস্থার কয়েকজন কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।