নীলফামারীর সৈয়দপুরে বেড়েছে সব ধরনের মুরগীর দাম। কেজিতে ৯০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে মুরগীর। অপরপাশে ডিজিটাল বাটখাড়া থাকলেও কৌশলগতভাবে ওজনে কম দেয়া হচ্ছে ক্রেতা সাধারণকে। ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কেজিতে মুরগীর ওই দাম লক্ষ্য করা যায়। সব মিলিয়ে যেন মুরগীর বাজারে দামের আগুন লেগেছে।
সৈয়দপুর শহরে মুরগির বাজার রয়েছে আধুনিক পৌর সবজী বাজারের উত্তর পাশে। এ ছাড়া পুরাতন মাছ বাজার,কলা হাটি এবং রেলওয়ে গেট বাজারে।
একই স্থানে মুরগীর ভিন্ন ভিন্ন দামের তারতম্য দেখা যায়। মুরগী ব্যবসায়ি মানিক জানান,তার দোকানে রয়েছে দেশী,পাকিস্তানী,বয়লার,লেয়ার ও সোনালী মুরগী। দাম রাখছেন দেশী ৩৮০ টাকা, লেয়ার ২৬০ টাকা,বয়লার ১৭০ টাকা ও সোনালী ২৩০ টাকা।অথচ কয়েক সপ্তাহ পুর্বে মুরগীর দাম ছিল দেশী ২৫০ টাকা, বয়লার ১২০ টাকা,সোনালী ১৮০ টাকা,লেয়ার ২০০ টাকা।
গত ১ সপ্তাহে প্রকারভেদে মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। একই স্থানের ব্যবসায়ীরা ভিন্ন ভিন্ন দামে মুরগি বিক্রি করতে দেখা যায়।
ক্রেতাদের অভিযোগ নিজের ইচ্ছে মতো মুরগি ব্যবসায়ীরা দাম হাকাচ্ছে। একদিকে দাম বেশি অন্যদিকে ওজনে কম দু‘দিক দিয়ে ব্যবসায়িরা লাভবান হলেও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ।
মুরগীর বাজারে এ অবস্থা বিরাজ করলেও যেন মাথা ব্যথা নেই প্রশাসনের।
সৈয়দপুরে রয়েছে ৮০ থেকে ৯০ জন ছোট বড় মুরগি ব্যবসায়ী। এরা অনেকটা মুরগির দাম নিজের ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেয়। কেউ কেউ মুরগি মজুদ থাকার পরও বলে এগুলো বিক্রির জন্য নয়।আবার কেউ কেউ বলে বিয়ে বা পিকনিক অনুষ্ঠানের অর্ডার আছে। এমনি নানা অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্রেতা সাধারণের কাছ থেকে দাম বেশি নিচ্ছে। অপরপাশে তারা ওজনে কম দিয়ে যাচ্ছে অহরহ। মুরগি ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান জানান বর্তমানে সৈয়দপুর উপজেলায় ৫‘শ খামারী রয়েছে। খামারে ৩২ দিনের মধ্যে দেড় কেজি ওজনের বয়লার মুরগি তৈরী করা হয়, ৩৬ দিনে পরিপূর্ণ হয় দুই কেজি ওজনের সোনালী মুরগি, ৫০ দিনে হয়ে থাকে ৬০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম। আর দেশি মুরগির বেলায় ১ কেজি ওজনের হতে ৪ মাস থেকে ৬ মাস সময় লাগে। এ হিসেবে খামারে ২ কেজি ওজনের বয়লার এবং সোনালী মুরগি তৈরী হতে ব্যয় হয় বড় জোর কেজি প্রতি ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকা। কিন্তু খামারীরা আমাদের কাছে তা বিক্রি করছে চড়া দামে। ফলে বাজারে মুরগির দাম হু-হু করে বেড়েই চলছে। আগামীতে আরও দাম বাড়বে বলে জানান তিনি। এদিকে খামারী বলছে বর্তমানে মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে মুরগির ওষুধের দামও। যার কারণে বেশি দামে আমাদেরকে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে খুচরা ব্যবসায়ী ওজন ও দামে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে। বাজারে সকল প্রকার মুরগির চাহিদা রয়েছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ী একদিকে দামে বেশি নিচ্ছে অপরপাশে ওজনে কম দিচ্ছে। ফলে দু‘দিক থেকে মুরগি ব্যবসায়ী লাভবান হলেও ক্রেতা সাধারণ ঠকছে।
নিয়ামতপুর সরকার পাড়ার ক্রেতা হাজী হামিদ সরকার জানান,মুরগী ব্যবসায়ীরা যা দাম চাচ্ছে তা দিয়েই মুরগী নিতে হচ্ছে। কুন্দল এলাকার ক্রেতা সবুর আলম ও বাসটার্মিনাল এলাকার সেকেন্দার আলি জানান,সব খানে সিন্ডিকেট। ফলে একবার দাম বাড়লে তা আর কমে না। তারা মুরগির বাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দাবী করেন।