নীলফামারীর সৈয়দপুরে জীবন সংগ্রামে বিজয়ী এক সৈনিকের নাম শিক্ষানুরাগী আবদুল হামিদ সরকার। বয়স ৭০ কিংবা তার উপর হবে। শহরের মুন্সিপাড়া এলাকার সরকার পাড়ায় তাঁর নিজস্ব বাসস্থান। ছোটবেলা থেকে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি। শিক্ষার প্রতি তাঁর ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ। বর্তমানে তাঁর ছেলে মেয়েরাও উচ্চশিক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষে মেয়ে শিক্ষকতা করছে সরকারী প্রার্থমিক বিদ্যালয়ে। ছেলেও লেখা পড়া শেষে ঢাকার একটি কলেজে শিক্ষকতা করছে।
আব্দুল হামিদ সরকার সম্পর্কে সৈয়দপুর ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষক বলেন, সভাপতি থাকাকালিন সময়ে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন আবদুল হামিদ সরকার। তিনি সৈয়দপুর ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বেশ কয়েক বার সভাপতি ছিলেন। সে সময় আমি পাশে থেকে দেখেছি শিক্ষার প্রতি তার উদার মনমানসিকতা। একসময় শিক্ষার্থীর জন্য তিনি বাড়ী বাড়ী গেছেন। নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে টাকা দিয়ে অসহায় ছাত্র- ছাত্রীকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়ে তাদের পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে আবদুল হামিদ সরকার ভোরের দর্পণকে জানান, আমি দীর্ঘ ১৩ বছর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক ছিলাম। জেলা দলিল লেখক সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক ছিলাম। বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ছিলাম। বর্তমানেও আমি দলিল লেখক সমিতির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছি। পেশাগত দিক দিয়ে আমি অত্যন্ত সুনামের সাথে আমার দায়িত্ব পালন করেছি এবং বর্তমান পর্যন্ত করে যাচ্ছি। তিনি আরও জানান, নিয়ামতপুর নব-দিগন্ত সংঘের দীর্ঘদিন যাবত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি নিজ উদ্যোগে তাঁর নিজস্ব জমিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি মহিলা মাদ্রাসা। সেখানে রয়েছে শুধু মহিলা শিক্ষক। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন মহিলা আরবি শিক্ষা লাভ করছে ওই মাদ্রাসায়। ওই মাদ্রাসার যাবতীয় ব্যয়ভার তিনি নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বহন করে আসছেন। প্রতি বছর তিনি ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করেন বার্ষিক খেলাধুলা। বিজয়ীদের দিয়ে থাকেন পুরস্কার সামগ্রী।
কয়েক বছর পুর্বে পৌর নির্বাচনে তিনি ৬নং ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে ভোট করেন। এলাকার লোকজনের চলাচলের জন্য তিনি নিজের জমির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করেন। আর আজ ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে জনসাধারণসহ এলাকাবাসী।
এছাড়াও তিনি এলাকার এতিম অসহায় ব্যক্তিদের গৃহ নির্মাণ, সেবামূলক কাজ ছেলেমেয়ের বিয়ের ব্যাপারে অর্থ দিয়ে, শ্রম দিয়ে করে আসছেন সহযোগিতা। তিনি আরও জানান আমি পৌর আ.লীগের ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি। অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে আমি আমার দায়িত্ব পালন করছি। ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিকবার সভাপতি ছিলাম এবং সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে প্রথমে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করি পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করি বেশ কয়েকবার।