খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম জুড়ে চলছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরির মহা ধুমধাম। এ উপজেলায় ৬০টি মন্দিরে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরীর কাজ।
কয়েক দিন পরেই শুরু হবে দিঘলিয়া উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গা পূজা। আর এ উৎসবকে সামনে রেখে চলছে দিঘলিয়া উপজেলা জুড়ে ৬০টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কাজ। দিঘলিয়া উপজেলাধীন সনাতন ধর্মালম্বীদের সব চেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে ৬০টি মন্দিরে শারদীয় উৎসব পালনকে কেন্দ্র করে চলছে ভাষ্করদের প্রতিমা তৈরীর ব্যস্ততা।
দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও দিঘলিয়া উপজেলায় প্রতিটি মন্দিরে চলছে খড়কুটা আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ। কোন্ মন্দিরের প্রতিমা কতটা সুন্দর হয় এটাই যেন প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য।
দিঘলিয়ায় শুধু মন্দিরে নয় উপজেলার ফরমাইশখানায় বাড়িতে বসে মৃৎশিল্পীদের প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। এ সকল প্রতিমা তৈরির পর নৌকা বা ট্রলারে করে নিয়ে যায় খুলনার বিভিন্ন এলাকায়। শুধু প্রতিমা নয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই মহামিলনকে ঘিরে তৈরি করছে নানা ধরনের মৃৎশিল্প। খুলনাঞ্চলে ফরমাইশখানার মৃৎশিল্পীদের তৈরি এ মৃৎশিল্পের যেন জুড়ি নেই। তাইতো দেশের প্রত্যন্তাঞ্চল থেকে নৌকা বা ট্রলারে করে নিয়ে যায় মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস। খুলনা, দৌলতপুর, দিঘলিয়া, মহেশ্বরপাশা, ফুলতলা, রূপসা, তেরোখাদা, যশোর, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাটির তৈরি রঙ্গীন খেলনার জুড়ি নেই। তাইতো এ সকল এলাকার ব্যবসায়ীরা অগ্রীম বায়না করেন তাদের চাহিদা মাফিক মাটির তৈরি রঙ্গীন খেলনার জন্য।
এই প্রতিমা তৈরীর কাজে যারা লিপ্ত আছেন তারা বলেন, আর ২০ দিন পরেই এই ধরাধামে দুর্গা মায়ের আবির্ভাব ঘটবে এরইমধ্যে শেষ করতে হবে এই প্রতিমা তৈরির কাজ।
তারা আরও বলেন, এখন আমরা খড়কুটা আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামো তৈরি করছি। এরপর প্রতিমার চোখ, নাক, মুখ, হাত-পাসহ বিভিন্ন অঙ্গ তৈরি হবে। কোন কোন প্রতিমাকে জয়েন্ট দিতে হবে। একে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপে আনতে হবে এবং রঙের আবরণে সাজসজ্জা দিয়ে পূর্ণাঙ্গরূপে সাজিয়ে তুলতে হবে ওই প্রতিমাকে। আর এটিই হলো আমাদের কাজ। তারপরই পূজারী পূজার আয়োজন করবেন এবং শুরু হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের উৎসবের ঘনঘটা। মন্দিরে মন্দিরে বেজে উঠবে শারদীয় দূর্গা উৎসবের ডামাডোল। শুরু হবে পূজার নানা দিনের নানা আয়োজন। এরইমধ্যে একজন সনাতন ধর্মালম্বী বলেন, সরকারী সহযোগিতা ও প্রশাসনের সহয়তা পেলে ২০২২ সালের শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে সনাতন ধর্মালম্বীরা বেশ ধুমধামের সহিত তাদের ধর্মীয় কর্মসূচি পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
দিঘলিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সৌমিত্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে জানান, এবার শারদীয় দূর্গা উৎসবে খুব আনন্দ হবে।
দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি শিববাড়ি মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রমেশ দাস, সহ-সভাপতি প্রদীপ দে, সাধারণ সম্পাদক শিপুল দাস ও কোষাধ্যক্ষ উৎপল রায় এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা সরকারি সাহায্য পেয়েছি। আমাদের চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান ও আমাদের মন্দিরে সাহায্য করেছেন। প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর ভূমিকায় থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এবার পূজায় খুব আনন্দ হবে।