জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের
উত্তর দাড়িয়ারপাড় গ্রামে ছয় সদস্যের পরিবারে চারজনই প্রতিবন্ধি। বৃদ্ধা
মা আমেলা বেগমসহ তার তিন কন্যার হয়নি জাতীয় পরিচয়পত্র।অসহায় এই পরিবারটির
দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে।জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় পাচ্ছেন না
সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। তাই পরিবারটির সহায়তায় সরকার ও বিত্তবানদের
এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, ঝিনাইগাতি উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের উত্তর দাড়িয়ারপাড়
গ্রামে শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে
ভিক্ষাবৃত্তি করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই গ্রামের মৃত আবদুল আলীর
বিধবা স্ত্রী আমেলা বেগম। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে বয়স তার প্রায় একশো
ছয় বছর ছুঁই ছুঁই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন তিনি। আর্থিক সংকট থাকায় তারা
কেউ নিতে পারেন না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। ঘরে নেই চকি বা খাট, ঘরে নেই
বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। রাতের বেলায় মেঝেতে একটা পাটি বিছিয়ে কাঁথা মুড়িয়ে
শুয়ে থাকেন তারা।
বৃদ্ধা আমেলা বেগমের বড় মেয়ে আবেদা বেগম বলেন, তার মা ও তিনিই সুস্থ।
তার ছোট বোন আফরোজা, দোলেনা, অজুফা ও ছোট ভাই আলী হোসেন তারা মানসিক
প্রতিবন্ধি। ছোট তিন বোন ও তার মায়ের আজও হয়নি জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি
কার্ড। তারা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তাদের জাতীয়
পরিচয় পত্র না থাকায় মিলছেনা সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা।শারীরিক ভাবে
অসুস্থ হলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা নেওয়া হয়না তাদের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রশিদ,আব্দুল আজিজ,আব্দুল মজিদ ও শাজাহান আলী
বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে তার স্বামী আবদুল আলী মারা যান। স্বামীর
মৃত্যুর পর দু’মুঠো ভাতের আশায় সন্তানদের নিয়ে পাড়ি জমান ঢাকা শহরে।
সেখানে হোটেল ছাড়াও অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন চলত
তাদের।এমন অবস্থা দেখে ঢাকার এক ব্যবসায়ী তাদের নিয়ে আসেন বাড়িতে। এরপর
তিনি তাদের নিজ গ্রাম উত্তর দাড়িয়ারপাড়ে বৃদ্ধা আমেলা বেগমের স্বামীর
রেখে যাওয়া বসত জমিতে একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেন। আবেদা বেগম সুস্থ
থাকায় অনেক আগেই তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামীর ঘর সংসারে আছেন
তিনি। আর তাদের ছোট ভাই মানসিক প্রতিবন্ধি হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ঘুরে
বেড়ায় কোথাও স্থির থাকেনা সে।বর্তমানে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকে
দোলেনা,আফরোজা ও অজুফা। প্রতিদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে
আসলেও সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পাননা তারা। কোন বেলায় খেয়ে না খেয়ে
অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। এ সময় সরকারের
সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন,
পরিবারটিকে ভোটার তালিকায় আনতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।