খুলনার পাইকগাছায় টানা চার দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে গ্রামীণ পথ-ঘাঠ। উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও আমনসহ পাট চাষীদের মধ্যে এসেছে স্বস্তি। তবে উপজেলার কাঁচা রাস্তাগুলোয় চলাচলে মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, তবে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টানা বৃষ্টিপাতের কারণে আমন চাষিদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। নতুন করে আবারো আমন চাষের জন্য জমি প্রস্তু করছেন তারা। অনাবৃষ্টির কারণে চাষযোগ্য অনেক জমি পতিত ছিলো। ধানের চারা ফেলেও বৃষ্টির অভাবে রোপণ করতে ব্যর্থ হন। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরে এসেছে কৃষকদের মাঝে। তাই আবার নতুন করে আমন চাষের স্বপ্ন দেখছেন তারা। শুরু করছে জমি প্রস্তুতে। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারা পাট চাষিদেরও প্রযাপ্ত বৃষ্টিতে স্বস্তি এসেছে। গত কয়েকদিন সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। যা বিরামহীনভাবে বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো। এতে সাধারণ মানুষের চলাফেরা এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম কিছুটা ব্যাহত হলেও পরিবেশ প্রকৃতি ও কৃষির জন্য আশীর্বাদ হিসেবে দেখছেন কৃষক। এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে এলাকার নদণ্ডনদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক এলাকায় ঝুঁকি বেড়েছে। কপোতাক্ষ নদে বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। নিন্মচাপ ও প্রবল বর্ষণে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাইকগাছা পৌর বাজারে প্রবেশ করছে জোয়ারের পানি। প্রবল বর্ষণে অনেক নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় নেট-পাটা অপসারণ করা হয়েছে। বেশি দুর্ভোগে আছে উপজেলার লতা ইউনিয়ের মানুষ। যার অধিকাংশ রাস্তা এখনো মাটির ও চিংড়িঘেরের বাঁধ। যে কয়টি ইটের সলিং রাস্তা তাও ভাঙ্গাচুরা ভঙ্গুর হয়ে চলাচলের অনুপযোগী। এ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে চরম সীমাহীন দুর্ভোগ পোয়াছে ঐ অঞ্চলের মানুষ। গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আবদুস সালাম কেরু বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের নেট-পাটা অপসারণ করে পানি সরানোর ব্যবস্থা করেছি। চাঁদখালি ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা মো. আবু ইলিয়াস বলেন, ইতোমধ্যে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারি অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করেছি। অপসারণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। টানা বৃষ্টিতে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, লীজঘের গুলোতে আমন রোপণ চলছে। তাছাড়া অন্য সকল ক্ষেত রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। আমনের চারা রোপণের সময় রৌদ্র ও অনাবৃষ্টি থাকা কৃষকদের পানি সেচ দিয়ে জমি তৈরী করতে হয়েছে। এই বৃষ্টি লবণাক্ত আমন আবাদে অনেক উপকার হবে। পাইকগাছা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাজু হাওলাদার জানান, এখন পূর্ণিমায় ভারিবৃষ্টি এবং বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থাকায় জোয়ারের অতিরিক্ত পানি উপকূলে উঠে পড়েছে। পাইকগাছায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। তবে কোনো বেড়ীবাঁধ ভাঙ্গেনি।