পৃথিবীর তিনটি প্রাচীন সভ্যতার একটি গড়ে ওঠে আজকের পাকিস্তানের সিন্ধু নদ উপত্যকায়। এটি সিন্ধুসভ্যতা নামে পরিচিত। ১৯২১ সালের আগ পর্যন্ত এই সভ্যতার কথা ছিল অজানা। ১৮৫৬ সালে রেলের বাঁধ নির্মাণের সময় অবশ্য এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের স্তুপ থেকে আনা ইট ব্যবহৃত হয়েছে। এসব ইট আনা হয়েছিল হরপ্পার ধ্বংসাবশেষ থেকে।
হরপ্পা, গোয়েনজোদারো ও আরও ছোট ছোট প্রায় একশ শহর ও গ্রাম নিয়ে প্রচীন এই সভ্যতাটি গড়ে উঠেছিল। লাহোর থেকে প্রায় একশ বিশ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে সিন্ধুর একটি শাখা নদীর তীরে হরপ্পার অবস্থান। গোয়েনজোদারো অবশ্য মূল নদী সিন্ধুর তীরেই অবস্থিত। করাচি থেকে এটি প্রায় দুশ মাইল উত্তর-পূর্বে।
মোয়েনজোদারোর ভবনগুলো নির্মিত হয়েছিল দাবার ছকের প্যাটার্নে। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে বহু বাড়িঘর ও দোকানের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া গেছে। শহরের এক কোণে ছিল সুরক্ষিত রাজধানী; ওখানে পাওয়া গেছে বিশাল শস্যাগার। যেসব শিল্পনিদর্শন এখানে পাওয়া গেছে তাতে বোঝা যায় তারা ছিল সুদক্ষ মৃৎশিল্পী ও মৃৎপাত্র তৈরির জন্য তারা ব্যবহার করত কুমোরের চাক। তারা পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করলেও ছুরি ও অস্ত্রশস্ত্র ছিল ব্রোঞ্জ ও তামার তৈরি। মোমেনজোদারোতে কতকগুলো ব্রোঞ্জনির্মিত পাত্র ও মূর্তি পাওয়া গেছে। তারা এক ধরনের চিত্রলিপি ব্যবহার করত যার পাঠোদ্ধার আজও সম্ভব হয়নি।
খিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে উত্তর-পশ্চিম থেকে আসা আর্যদের আক্রমণে এই সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়।