রাজশাহীর বাঘায় চাচা আবদুর রশিদের ছুরিকাঘাতে ভাতিজা শহিদ হোসেন (২০) গুরুতর আহত হয়েছে। শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় আড়ানী পৌর বাজারের তেতুলতলায় শত শত মানুষের জনসম্মুখে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার আড়ানী দিয়াড়পাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শহিদ হোসেন শনিবার নিজস্ব ভ্যানে করে যাত্রী নিয়ে আড়ানীর হাটে আসছিল। ভ্যান নিয়ে আড়ানী বাজারের তেতুলতলা পৌঁছলে আপন ছোট চাচা চকসিংগা গ্রামের আজাহার হোসেনের ছেলে আবদুর রশিদ শত শত মানুষের জনস্মুখে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। এ সময় চাচা আবদুর রশিদকে স্থানীয়রা আটক করে আড়ানী ঈদগা মাঠে ঘরের খুটির সাথে রশি দিয়ে বেধে রাখা হয়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে আবদুর রশিদ বলেন, আমাকে যেভাবে মেরেছে আমিও তাকে সেভাবে মেরে শোধ নিয়েছি। তবে ৬/৭টি ছুরিকাঘাত করেছে বলে এ সময় শিকার করেন তিনি।
ভাতিজা শহিদকে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে শহিদের দাদি মালেকা বেগম বলেন, আমার ৫ ছেলে। এরমধ্যে আবদুর রশিদ ও শহিদুল ইসলাম চকসিংগা গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি। বছর খানেক আগে আবদুর রশিদের স্ত্রী পাতাসী বেগম রান্না করার পানি ফেলতে গিয়ে শহিদুলের ঘরের সামনে পড়ে। এতে তাদের দুই ভাইয়ের স্ত্রীর মধ্যে ঝড়গা হয়। একপর্যায়ে ভাতিজা শহিদ তার ছোট চাচা আবদুর রশিদকে হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে পেটের ভুড়িনাড়ি বের করে দেয়। দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আসেন। তারপর চকসিংগা গ্রাম থেকে বাড়িঘর রেখে শহিদ দিয়ারপাড়া গ্রামে চলে যায়। তার বাড়িঘরের টিন ও আসবাবপত্র দিনে দিনে বিক্রি করে দেন আবদুর রশিদ। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তীক্ততা বাড়তে থাকে।
এ বিষয়ে আবদুর রশিদের পিতা আজাহার হোসেন বলেন, সামান্য একটি বিষয় নিয়ে আমার পরিবারে দীর্ঘদিন থেকে অশান্তি চলছে। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে সমাধান করতে না পেয়ে স্থানীয়দের বলেও এর সমাধান করতে পারেনি। আমার বয়স হয়ে গেছে আমিও কিছু করতে পারছিনা।
এ বিষয়ে শহিদের পিতা শহিদুল বলেন, আমার ছেলের অবস্থা ভাল না। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে। গরীব মানুষ ছেলের রক্তের প্রয়োজন, কিন্তু রক্ত পাচ্ছিনা। কোন মতে এক ব্যাগের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। ডাক্তার বলেছেন আরো তিন ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। শেষ পর্যন্ত কি হবে বুঝতে পারছিনা। ছেলেকে নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে আছি।
এ বিষয়ে আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী বলেন, আবদুর রশিদ এলাকায় অত্যাচারী ব্যক্তি। সে এলাকায় মাদকের সাথে সম্পৃক্তরা রয়েছে। পাশাপাশি ছ্যাচড়া চোর। তাকে বারবার এসব কর্মকা- থেকে সরে আসার জন্য বলেছি, কিন্তু শুনেনি।
বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ছুরিকাঘাতের বিষয়ে ঘটনাস্থল থেকে আবদুর রশিদকে আটক করা হয়েছে।