দুর্গা প্রতিমার কারিগর অমল চন্দ্র পাল এবার তৈরি করছেন ৩৪টি প্রতিমা। তার সাথে দিনরাত পরিশ্রম করছেন তার স্ত্রী দীপা রানী পাল,ছেলে অলোক পালসহ পরিবারের সদস্যরা। অপূর্ব পাল ও তার স্ত্রী সুচিত্রা পাল অর্ডার পেয়েছেন ১৫টি প্রতিমার। সনাতন পাল তৈরি করছেন ১৪টি দুর্গা প্রতিমা। পাবনার চাটমোহর উপজেলার নিমাইচড়া ইউনিয়নের বেলগাছি পালপাড়ায় এদের বসবাস। এবার সব মিলিয়ে এই ছোট পাড়ায় ৬৫টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছেন পাল সম্প্রদায়। প্রতি বছরই এই পাড়ায় প্রতিমা তৈরির ধূম পড়ে। এই উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথর গ্রামের সত্যেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তৈরি করছেন ১৬টি প্রতিমা।
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেলগাছি ও বোঁথর গ্রামের প্রতিমা শিল্পীরা। মনের মাধুরী দিয়ে গড়ে তুলছেন দেবী দুর্গাকে। আর ২/৩ দিন পরেই প্রতিমায় দেওয়া হবে রংয়ের আচড়। দিন রাত কেটে যাচ্ছে প্রতিমা তৈরির কাজে কারিগরদের।
বেলগাছি গ্রামের প্রতিমা শিল্পী অমল চন্দ্র পঅর জানালেন,এবার তিনি ৩৪টি প্রতিমা তৈরি করছেন। চলনবিল অঞ্চলের গুরুদাসপুর,তাড়াশ,ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর,সিংড়া,উল্লাপাড়া ও চাটমোহরের বিভিন্ন মন্ডপের জন্য দুর্গা প্রতিমা তিনি তৈরি করছেন। জানালেন,মাটি,খড়,বাঁশ,রংসহ প্রতিমা তৈরি উপকরণের দাম বেড়েছে। ডার কারণে এবার প্রতিমা তৈরিতে খরচও বেশি। সর্বনি¤œ ১২ হাজার টাকায় তিনি প্রতিমা তৈরি করছেন। সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা। একই গ্রামের অপূর্ব পাল ও সনাতন পাল জানালেন,এখন প্রতিমা তৈরিতে খুব একটা লাভ হয়না। বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখেছি,তাই অল্প লাভে প্রতিমা তৈরি করছি। তারা বললেন,বছরের এই সময়টাই পরিবার নিয়ে প্রতিমা তৈরি করে কিছু আয় হয়। তাছাড়া সারা বছর মাটির তৈরি তৈজমপত্রের তেমন চাহিদা থাকেনা।
বোঁথর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী সত্যেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানালেন,তিনি এবার ১৬টি প্রতিমা তৈরি করছেন। প্রতিটি প্রতিমা প্রকার ভেদে ১৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। বললেন,আগের মতো আর প্রতিমা তৈরি হচ্ছেনা। পূজার সংখ্যাও কমে গেছে। আজকালের মধ্যেই রং তুলির আঁচড় পড়বে প্রতিমায়,বললেন এই শিল্পী।
শরতের আগমণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজাকে সামনে রেখে মন্ডপগুলোতে চলছে সাজ-সজ্জার কাজ। দুর্গাপূজার আর কয়েকদিন বাকি। পহেলা অক্টোবর শুরু হচ্ছে পূজার মূল পর্ব। সেদিন মহা ষষ্টী। ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া। চাটমোহরে এবার ৫২টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানালেন উপজলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক অশোক চক্রবর্তী। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপনে সকলের সহযোগিতা চাইলেন তিনি।