ঐতিহাসিকগণ যাকে আধুনিক কাল বলে মনে করেন, রেনেসাঁস বলতে তার সূচনাকেই বোঝায়। রেনেসাস একটি ফরাসি শব্দ, যার অর্থ পুনর্জন্ম। একসময় ঐতিহাসিকগণ মনে করতেন, মধ্যযুগের অন্ধকার সময়ের পর শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে একটা পুনর্জন্ম ঘটেছিল। সে সময় বিদ্যার ব্যাপক প্রসার ঘটলেও এটা বলাই বোধ করি আরও ভাল হবে যে, জ্ঞান ও কলা অনুশীলনের ক্ষেত্রে এ চর্চা চলে আসছিল প্রাচীন গ্রিক এবং রোমান সভ্যতা থেকেই; বিশেষ করে চার্চে এবং আরবদের মাঝে যারা গ্রিক ঐতিহ্য বহন করছিল।
এত পরিবর্তন এবং উত্থান-পতনের মধ্যে রেনেসাঁসের শুরু ঠিক কবে থেকে হয়েছিল সঠিকভাবে তা নির্ণয় করা দুরূহ। সাধারণভাবে বলা যায় হয়ে থাকে, ১৪৫৩ সালে অটোমান তুর্কিদের হাতে কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের জ্ঞানীগুণীরা যখন নিরাপত্তার জন্য পশ্চিমে পালিয়ে যেতে শুরু করেন তখন থেকেই রেনেসাঁসের সূচনা।
ছাপাখানার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তাদের লব্ধ জ্ঞান দ্রুত বিস্তার লাভ করতে থাকে; প্রচলিত ধর্মীয় ধারণা, কলা ও বিজ্ঞান নিয়ে উত্থাপিত হতে থাকে নানা প্রশ্ন। চার্চের বাইরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিকশিত হতে থাকে জ্ঞানভাণ্ডার। জীবন ও কলার ক্ষেত্রে ধর্মীয় ভাবের চেয়ে প্রাধান্য পেতে থাকে মানুষ এবং সর্বগুণসম্পন্ন ব্যক্তিই হয়ে ওঠে আদর্শ। এসব নতুন ধারণা অভিযাত্রীদেরও প্রেরণা জোগায়--তারা আবিষ্কার করতে থাকেন নতুন নতুন দেশ ও বাণিজ্যপথ এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও অগ্রসর হতে থাকেন সংস্কারের পথে।
রেনেসাঁস
মধ্যযুগে খ্রিস্টান চার্চই ছিল বিদ্যাশিক্ষার প্রধান উৎস এবং কলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। আর এজন্য সব শিক্ষারই ভিত্তি ছিল ধর্ম। কিন্তু ১২০০-এর শতকে বোলোনা, প্যারিস এবং অক্সফোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়ে আরও ব্যাপক মানুষকে অধ্যয়ন-সংশ্নিষ্ট করে। তাদের জ্ঞানের পরিধি আরও সম্প্রসারিত হয় প্রাচীন গ্রিস এবং রোমের লেখা পড়ে। ১৮০০-এর শতকের ঐতিহাসিকগণ একেই আখ্যা দিয়েছেন রেনেসাঁস বা শিক্ষার পুনর্জন্ম বলে।
রেনেসাঁসের অন্যতম উল্লেখযোগ্য তারিখ হল ১৩৯৭ সাল, কনস্টান্টিনোপলের ম্যানুয়াল ক্রাইসোলোরাস যেদিন ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিক ভাষার অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। খুব তাড়াতাড়িই ইতালির প-িতবর্গকে প্রাচীন দার্শনিকদের রচনা পেয়ে বসে, এসব লেখার বিষয়বস্তু ছিল এমন সব প্রশ্ন যার জবাব খ্রিস্টান চার্চ দেয়নি। আর এ থেকে মানবতাবাদণ্ডএর উদ্ভব, যা বিশ্বাস করে ঈশ্বর নন, মানুষই তার নিজের ভাগ্যের নিয়ন্তা।
গ্রিক এবং রোমান ভাস্করদের ভাস্কর্যে মনুষ্যাকৃতি সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাস্তবতার অনুসরণ চিত্রকলার ক্ষেত্রে এক বিশাল পরিবর্তন সাধন করে। ফ্লোরেন্সের চিত্রশিল্পী জিওট্টো (১২৬৬-১৩৩৭) চিত্রকলার এই পরিবর্তনের পথিকৃৎ। গতানুগতিক মধ্যযুগীয় আড়ষ্ট রীতির ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন এনে তিনি তার ক্যানভাসে নর-নারীর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলেন বাস্তবে ঠিক তারা দেখতে যেমন তেমনভাবে। ১৪০০-এর শতকে ইতালির চারু ও কারুকলায় আবির্ভাব ঘটে চিত্রশিল্পী ম্যাসাসিও, ভাস্কর দোনাতেল্লো প্রমুখ মহান শিল্পীর। দোনাতেল্লো প্রাচীন রোমান যুগ এবং স্থপতি ব্রুনেলেশির পর এই প্রথম আবার ব্রোঞ্জের মূর্তি গড়েন।
১৫০০-এর শতক রেনেসাঁসের চরম উৎকর্ষের কাল; এই সময়ে ইতালীয় শিল্পীরা তাদের সেরা কর্মগুলো উপহার দেন। এই কালপর্বে মূলত তিনজন স্বমহিমায় প্রভাব বিস্তার করেন : মিকেলাঞ্জেলো, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি এবং রাফায়েল। এই তিনজনই চিত্রকলার অনেকক্ষেত্রে ছিলেন দক্ষ, রেনেসাঁস যুগের আদর্শ ছিল বিশ্বজনীন মানুষ। এঁদের মধ্যে সবচাইতে চৌকস চিত্রকর ছিলেন লিওনার্দো-যিনি ছিলেন অত্যন্ত মহিমান্বিত চিত্রকর, ভাস্কর, স্থপতি, প্রকৌশলী, সঙ্গীতজ্ঞ ও আবিষ্কারক।
একনজরে বিশ্ব
১৪৫৪ : প্রতিস্থাপনযোগ্য হরফে ছাপাখানার সফল রূপলাভ।
১৪৫৫ : ইংল্যান্ডে গোলাপের যুদ্ধাবলি (১৪৮৫ সাল পর্যন্ত)।
১৪৫৯ : অটোমান তুর্কিদের সার্বিয়া দখল।
১৪৬৭ : চার্লস দ্য বোল্ড বারগাভির ডিউক নির্বাচিত।
১৪৮৬ : চৈতন্য।
১৪৮৭ : হাবশি রাজত্ব।
১৪৮০ : মালাধর বসু (গুণরাজ খা)।
১৪৯২ : স্পেনের গ্রানাডা দখল।
১৪৯২ : কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার।
১৪৯২ : বিপ্রদাস চক্রবর্তী-এর মনসামঙ্গল।
১৪৯৩ : বিজয়গুপ্ত-এর পদ্মাপুরাণ।
১৪৯৩ : হোসেনশাহি বংশ।
১৪৯৩ : সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ।
১৪৯৪ : দ্রোঘেদা সংবিধি।
১৪৯৭ : পর্তুগাল থেকে ইহুদিদের বিতাড়ন।
১৪৯৮ : ভারতে পর্তুগিজ অনুপ্রবেশ।
১৪৯৯ : বাসল চুক্তি।
১৫০১ : ফ্রান্স এবং স্পেনের নেপলস্ দখল।
১৫১৭ : সিলভেরা-র নেতৃত্বে পর্তুগিজদের চট্টগ্রাম আগমন।
১৫১৯ : সুলতান নাসিরুদ্দিন নসরত শাহ।
১৫১৯ : পঞ্চম চার্লসের রোম সম্রাট হিসাবে অভিষেক (১৫৫৬ সাল পর্যন্ত)।
১৫২০ : স্বর্ণবস্ত্রের ক্ষেত্র।
১৫২১ : ধর্ম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
১৫২৩ : প্রথম গাস্টেভাস সুইডেনের রাজা নির্বাচিত।
১৫২৬ : প্রথম পানিপথের যুদ্ধে বাবরের জয়লাভ। মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা।
১৫২৭ : স্পেনীয় এবং জার্মানদের রোমনগরী লুণ্ঠন।
১৫৩২ : নুরেমবার্গের ধর্মীয় শান্তি প্রতিষ্ঠা।
১৫৩২ : সুলতান আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ।
১৫৩৩ : চতুর্থ আইভানের রাশিয়া শাসন শুরু (১৫৮৪ সাল পর্যন্ত)।
১৫৩৩ : গিয়াসুদ্দিন মাহমুদ শাহ।
১৫৩৪ : শ্রেষ্ঠত্বের প্রবিধান।
১৫৩৯ : চৌসার যুদ্ধে শের শাহের কাছে হুমায়ুনের পরাজয়।
১৫৪০ : শের শাহের গৌড়বিজয়।
১৫৪০ : বৃন্দাবনে বাঙালি বৈষ্ণব-গোস্বামিগণের প্রতিষ্ঠা।
১৫৪১ : শেরশাহ শাসনকর্তার পদ উঠিয়ে দিয়ে বাংলাকে ১৯টি সরকারে বিভক্ত করে প্রত্যেক সরকারে একজন করে আমির নিযুক্ত করেন।
১৫৪৫ : তৃতীয় পোপ পল চালু করেন ট্রেন্ট পরিষদ।
১৫৪৫ : কলিঙ্গের দুর্গ অবরোধকালে বারুদের আগুনে শেরশাহের মৃত্যু।
১৫৫৩ : মুহাম্মদ শাহি রাজত্ব।
১৫৬১ : স্কটের রানি মেরির স্কটল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন।
১৫৬২ : ফ্রান্সে ধর্মীয় যুদ্ধ (১৫৯৮ সাল পর্যন্ত)।
১৫৬৪ : রাশিয়ায় নৈরাজ্যের শাসন শুরু।
১৫৬৪ : কররানি রাজত্ব।
১৫৫৬ : সম্রাট আকবর।
১৫৮৬ : স্পেনের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের বিদ্রোহের সূচনা।
১৫৭২ : সেন্ট বার্থোলোমিউ দিবসে হত্যাযজ্ঞ।
১৫৭৫ : মোগল সম্রাটদের প্রত্যক্ষ শাসন শুরু।
১৫৮০ : কবিকঙ্কণ মুকুন্দরাম। কৃষ্ণদাস কবিরাজ।
১৫৮৪ : বারো ভূঁইয়াদের ব্যর্থ বিদ্রোহ।
১৫৮৮ : জর্জিয়ান বর্ষপঞ্জির প্রবর্তন।
১৫৮৮ : স্পেনীয় আর্মাডার পরাজয়।
১৫৯৮ : নান্টেসের অনুশাসন।
১৫৮৯ : চতুর্থ হেনরির ফ্রান্সের রাজা হিসাবে অভিষেক (১৬১০ সাল পর্যন্ত)।
১৬০৫ : গানপাউডার প্লট বা ষড়যন্ত্র আবিষ্কার।
১৪৬৭ : জাপানে গৃহযুদ্ধের সূচনা।
১৪৭২ : ভেনিশীয়দের স্মার্না ধ্বংস। অটলুক-বেলির যুদ্ধ।
১৪৭৫ : তুর্কিদের ক্রিমিয়া বিজয়।
১৪৯৮ : ভাস্কো ডা গামার ভারতে পদার্পণ।
১৫০৯ : দিউ-এর যুদ্ধ।
১৫১৩ : পর্তুগিজদের ক্যান্টনে প্রবেশ।
১৫১৪ : তুরস্ক এবং পারস্যের মধ্যে যুদ্ধ।
১৫১৬ : অটোমান সাম্রাজ্য এবং মিসরের যুদ্ধ (১৫১৭ সাল পর্যন্ত)।
১৫২৬ : মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা।
১৫৩৪ : তুরস্কের বাগদাদ এবং মেসোপটেমিয়া দখল।
১৫৪৯ : সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ারের মাধ্যমে জাপানে খ্রিস্টধর্মের প্রচার।
১৫৫৬ : সম্রাট আকবরের কাছে পানিপথের যুদ্ধে হিন্দুরা পরাজিত।
১৫৫৭ : ম্যাকাউয়ে পর্তুগিজদের বসতি স্থাপন।
১৫৭১ : লেপান্টোর যুদ্ধ।
১৫৭৩ : সাইপ্রাস ছেড়ে দেয় ভেনিস।
১৫৭৭ : উত্তর ভারতকে একতাবদ্ধ করেন সম্রাট আকবর।
১৫৯০ : তুরস্ক এবং পারস্যের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা। জাপানকে একতাবদ্ধ করেন হিদেয়োশি।
১৫৯২ : হিদেয়োশির কোরিয়া দখল। সম্রাট আকবরের সিন্ধু দখল।
১৬০০ : জাপানে তোকুগাওয়া যুগের সূচনা।
১৬০৩ : পারস্যের তাব্রিজ, এরিভান, শিরভান এবং কার্স দখল।
১৬০৪ : ফ্রান্সের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠিত। সাইবেরিয়ায় রাশিয়ার বসতি স্থাপন শুরু।
১৪৫৪ : ষষ্ঠ হেনরি উন্মাদ বলে ইয়র্কের ডিউক রিচার্ড ইংল্যান্ডের অন্তবর্তীকালীন শাসক নিযুক্ত হন।
১৪৫৪ : জার্মানিতে প্রতিস্থাপনযোগ্য হরফের ছাপাখানা আবিষ্কারে জোহানেস গুটেনবার্গের সফলতা অর্জন।
১৪৫৫ : ষষ্ঠ হেনরির সিংহাসন পুনর্দখল। ইয়র্কের রিচার্ডের স্থলাভিষিক্ত হন সমার সেট এবং রিচার্ডকে রাজসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়। গোলাপ যুদ্ধ ইয়র্কের প্রাসাদ এবং ল্যাংকাস্টারের প্রাসাদের মধ্যে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধের সূচনা (১৪৮৫ সাল পর্যন্ত)।
১৪৫৫ : সেন্ট আলবানসের যুদ্ধ। সমারসেট পরাজিত এবং নিহত।
১৪৫৫ : তৃতীয় ক্যালিক্সটাস পোপ নিযুক্ত (১৪৫৮ সাল পর্যন্ত)।
১৪৫৫ : ভেনিশীয় নাবিক ক্যাডামোস্টো সেনেগাল এবং গাম্বিয়া নদীতে অভিযানে চালান এবং কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কার করেন (১৪৫৬)।
১৯৫৬ : তুর্কিদের এথেন্স দখল।
১৪৫৮ : দ্বিতীয় পিয়াস পোপ নিযুক্ত (১৪৬৪ সাল পর্যন্ত)।
১৪৫৮ : ম্যাথিয়াস কর্ভিস হাঙ্গেরির রাজা হিসাবে অভিষিক্ত (১৪৯০ সাল পর্যন্ত)।
১৪৫৮ : জর্জ পোডিয়োড ববাহেমিয়ার রাজা হিসাবে অভিষিক্ত (১৪৭১ সাল পর্যন্ত)।
১৪৫৯ : অটোমান তুর্কিদের সার্বিয়া বিজয়।
১৪৬০ : ওয়েস্টফিল্ডের যুদ্ধ। ইয়র্কের রিচার্ড পরাজিত এবং নিহত। ওয়ারইউকের আর্ল (কিং মেকার) ইয়র্কপন্থিদের হয়ে ল-ন দখল করেন।
১৪৬০ : রক্সবার্গের যুদ্ধ : স্কটল্যান্ডের দ্বিতীয় জেমস নিহত।
১৪৬০ : তৃতীয় জেমস স্কটল্যান্ডের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত (১৪৮৮ সাল পর্যন্ত)।
১৪৬০ : নর্দাম্পটনের যুদ্ধ : চতুর্থ হেনরি ইয়র্কপন্থিদের হাতে ধৃত।
১৪৬০ : তুর্কিদের মোরেয়া দখল।
১৪৬১ : মাটিমার’স ক্রস এবং টাউটনের যুদ্ধ : রিচার্ডের পুত্র ইয়র্কের এডোয়ার্ড ল্যাংকাস্টারিয়ানদের পরাজিত করেন এবং রাজা হন।
১৪৬১ : চতুর্থ এডোয়ার্ড ইংল্যান্ডের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত (১৪৮৩ সাল পর্যন্ত)।
১৪৬১ : একাদশ লুই ফ্রান্সের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত (১৪৮৩ সাল পর্যন্ত)।
১৪৬১ : তখনও গ্রিকদের টিকে থাকা ট্রেবিজোন্ড রাজ্য দখল করে নেয় তুর্কিরা।
১৪৬২ : তৃতীয় আইভান (দ্য গ্রেট) মস্কোর ডিউক হলেন (১৫০৯ সাল পর্যন্ত)।
১৪৬২ : আরবদের কাছ থেকে জিব্রাল্টার দখল করে নেয় ক্যাস্টিল।
১৪৬৩ : অটোমান তুর্কি এবং ভেনিশীয়দের যুদ্ধ (১৪৭৯ সাল পর্যন্ত)।
১৪৬৪ : দ্বিতীয় পল পোপ নিযুক্ত (১৪৭১ সাল পর্যন্ত)।
১৪৬৪ : চতুর্থ এডোয়ার্ড এলিজাবেথ উডভিলকে বিয়ে করেন।
১৪৬৫ : চতুর্থ এডোয়ার্ডের হাতে বন্দি হন ষষ্ঠ হেনরি।
১৪৬৫ : গণমঙ্গল সংঘ গঠিত। অ্যালেনকন, বেরি, বারগান্ডি, বোরবো এবং ললারের ডিউকগণ একাদশ লুইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন।
১৪৬৬ : থর্নের শান্তিচুক্তি। পোল্যান্ড টিউটনিক নাইটদের কাছ থেকে প্রশিয়ার বেশির ভাগ অংশ লাভ করে।
১৪৬৬ : চতুর্থ এডোয়ার্ডের সঙ্গে ওয়ারইউকের বিবাদ।
১৪৬৬ : একাদশ লুইয়ের সঙ্গে ওয়ারউইকের জোট গঠন।
১৪৬৭ : চার্লস দ্য বোল্ড বারগাভির ডিউক হলেন, যিনি ছিলেন একাদশ লুইয়ের মুখ্য প্রতিদ্বন্দী।
১৪৬৭ : জাপানে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের সূচনা, যা ১০০ বছরেরও বেশি সময় স্থায়ী হয়েছিল।
১৪৭৯ : ক্যাস্টিলের পঞ্চম ফার্দিনান্দ আরাগনের রাজা হন (১৫১৬ সাল পর্যন্ত); তিনি পরিচিত ছিলেন ক্যাথলিক রাজা হিসাবে।
১৪৭৯ : কনস্টান্টিনোপল চুক্তি : সাগরে বাণিজ্য অধিকারের জন্য ভেনিস অটোমান সাম্রাজ্যকে কর দিতে সম্মত।
১৪৮০ : দ্য গ্রেট বলে পরিচিত তৃতীয় আইভান, তাতারদের কাছে বশ্যতার পরিসমাপ্তি ঘটান।
১৪৮০ : তুর্কিরা সেন্ট জনের নাইটদের অধিকারে থাকা রোডস অবরোধ করে।
১৪৮১ : অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা দ্বিতীয় মোহাম্মদের মৃত্যু।
১৪৮২ : পর্তুগিজ নৌ-অনুসন্ধানী ডিয়াগো ক্যাও কঙ্গো নদীতে অভিযান চালান (১৪৮৪ সাল পর্যন্ত)। পর্তুগজিরা গোল্ড কোস্টে (ঘানা) বসতি স্থাপন করে।
১৪৮৩ : চতুর্থ এডোয়ার্ডের মৃত্যু।
১৪৮৩ : পঞ্চম এডোয়ার্ড ইংল্যান্ডের রাজা হন; তাঁর চাচা গ্রস্টারের ডিউক রিচার্ড পরে তাকে উৎখাত করেন।
১৪৮৩ : তৃতীয় রিচার্ড ইংল্যান্ডের রাজা হন (১৪৮৫ সাল পর্যন্ত)।
১৪৮৩ : পঞ্চম এডোয়ার্ড এবং তার ভাইকে লন্ডনের দুর্গে হত্যা করা হয়।
১৪৮৩ : অষ্টম চার্লস ফ্রান্সের রাজা হন (১৪৯৮ সাল পর্যন্ত)।
১৪৮৪ : রাজা আর্থার সম্পর্কে কবিতার আকারে লেখা কিংবদন্তির সংকলন করেন স্যার টমাস ম্যালোরি। মোর্টে ডি আর্থার নামের এই কাব্য সংকলন প্রকাশ করেন ক্যাক্সটন।
১৪৮৪ : অষ্টম ইনোসেন্ট পোপ নিযুক্ত (১৪৯২ সাল পর্যন্ত)।
১৪৮৫ : বসওয়ার্থ ফিল্ডের যুদ্ধ : রিচম-ের আর্ল হেনরি টিউডর তৃতীয় রিচার্ডকে পরাজিত এবং হত্যা করেন। তিনি সপ্তম হেনরি উপাধি ধারণ করে ইংল্যান্ডের রাজা হন (১৫০৯ সাল পর্যন্ত)। টিউডরদের মধ্যে তিনিই ছিলেন প্রথম রাজা। হাঙ্গেরি ভিয়েনা দখল করে এবং অস্ট্রিয়ার নিম্নাঞ্চলের অধিকার অর্জন করে মধ্য ইউরোপে সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়।
১৪৮৬ : হবসবার্গের ম্যাক্সিমিলান জার্মানির রাজা হন।
১৪৮৬ : ইংল্যান্ডের সপ্তম হেনরি ইয়র্কের এলিজাবেথকে বিয়ে করেন; ইয়র্ক এবং ল্যাংকাস্টার ভবনের ঐক্য।
১৪৮৮ : দিয়াশ উত্তমাশা অন্তরীপ প্রদক্ষিণ করেন।
১৪৮৮ : চতুর্থ জেমস স্কটল্যান্ডের রাজা হন (১৫১৩ সাল পর্যন্ত)।
১৪৯২ : ক্যাস্টিলের পঞ্চম ফার্দিনাদ গ্রানাডা জয় করেন এবং স্পেনে মুসলমানদের প্রভাবের পরিসমাপ্তি ঘটে।
১৪৯২ : ষষ্ঠ আলেকজান্ডার (রডরিগো বোরজিয়া) পোপ নিযুক্ত হন (১৫০৩ সাল পর্যন্ত)। ক্রিস্টোফার কলম্বাস আটলান্টিক পাড়ি দেন এবং পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) আবিষ্কার করেন।
১৪৯৩ : আসকিয়া মোহাম্মদের অধীনে সোনঘাই সাম্রাজ্যের উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে। তিনি ম্যানডিঙ্গো সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অধিকার করেন।
১৪৯৩ : পোপ ষষ্ঠ আলেকজান্ডার নতুন আবিষ্কৃত দেশগুলো স্পেন ও পর্তুগালের মধ্যে ভাগ করে দেন।
১৪৯৩ : প্রথম ম্যাক্সিমিলান মহান রোমান সম্রাট হিসাবে অভিষিক্ত (১৫১৯ সাল পর্যন্ত।)
১৪৯৪ : অষ্টম চার্লস ইতালি আক্রমণ করেন।
১৪৯৪ : টর্ডেসিলাস চুক্তি : স্পেন এবং পর্তুগাল পোপের দেওয়া সীমারেখা আরও পশ্চিমে সরিয়ে নেয়।