দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় মনের দুঃখ কষ্ট আর হতাশা নিয়ে ম্যাসেঞ্জারে ভাইবোনকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে শয়ন কক্ষের শেলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে ইসরাত জাহান লিমা (২২) নামের এক কলেজছাত্রী। আজ রোববার (২ অক্টোবর) সকালে লিমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতারের মর্গে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
নিহত ইসরাত জাহান লিমা (২২) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার আমড়া গ্রামের ইলিয়াস হোসেন লিটনের মেয়ে।
নিহত লিমার বাবা ইলিয়াস হোসেন লিটন বলেন, তার মেয়ে ইসরাত জাহান লিমার গত চার বছর পূর্বে একই এলাকার সেলিম রেজার সাথে বিয়ে হয়। কিন্তু পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ের কিছুদিন বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাদের।
এরপর থেকে ইসরাত জাহান লিমা পিতার বাড়ীতে থেকে দিনাজপুর কেবিএম কলেজে স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষে লেখাপড়া করতো। প্রথম স্বামীর সাথে বিচ্ছেদের পর থেকেই লিমার কোথায় বিয়ে ঠিকাঠাক করা হলেই পূর্বের স্বামী বর পক্ষসহ ঘটককে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বেশ কয়েকটি বিয়ের সমন্ধ ভেঙ্গে দিয়েছে। একইভাবে পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া গ্রামে লিমার বিয়ে ঠিকঠাক হলে প্রথম স্বামী পূর্বের মতোই চক্রান্ত করে সেই বিয়েও ভেঙ্গে দেয়। এসব বিষয় নিয়ে লিমা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এরই একপর্যায়ে গত শনিবার (১ অক্টোবর) রাতে ঢাকায় চাকরিজীবী তার বড়বোন লিজাকে ম্যাসেঞ্জারে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। সেখানে সে তার বোনকে লেখে ‘তোর সাথে হয়ত আর আমার দেখা হবে না। আব্বা মাকে দেকাশুনা করিস। আমাকে ক্ষমা করে দিস।’ একই রাতে অপর একটি বার্তা পাঠায় তার আরেক চাচাতো ভাইকে। সেখানে লিমা লেখে, ‘আমি চলে যাচ্ছি। আমার কাছে কেও কোন টাকা পয়সা পেলে, তার শোধ করে দিস।’
আজ রোববার (২ অক্টোবর) সকালে ঢাকার বড়বোন লিমার ম্যাসেজটি দেখে তার মা-বাবাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে তার মা-বাবা লিমার শোয়ার ঘরে দিয়ে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে লিমার মরদেহ শেলিং ফ্যানে ঝুলতে দেখতে পান।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আবু হাসান কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে লিমার আত্মহত্যার বিষয়ে কারো কোনো প্ররোচনা আছে কি না? যদি থাকে তবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।