চার বছর আগে ক্যানবেরা পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যে স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেখান থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৮ সালের ওই সিদ্ধান্ত শান্তি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং অস্ট্রেলিয়াকে অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছে, মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। দূতাবাস তেল আবিবে থাকলেও অস্ট্রেলিয়া ইসরায়েলের বন্ধুত্ব ‘অবিচল’ থাকবে, জোর দিয়েই বলেছেন অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জেরুজালেমের কতটুকু কার, এ নিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েক দশক ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। ক্যানবেরার এই সিদ্ধান্তে ‘হতাশা’ ব্যক্ত করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ইয়ের লাপিদ বলেছেন, “জেরুজালেম ইসরায়েলের চিরন্তন ও অবিচ্ছিন্ন রাজধানী। কোনো কিছুই এটিকে বদলাতে পারবে না।” যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে কয়েক দশকের মার্কিন নীতি পাল্টে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে বিশ্বজুড়ে তুমুল শোরগোল শুরু হয়। পরের বছরের মে মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরে। কয়েক মাস পর অস্ট্রেলিয়ার তখনকার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনও ওয়াশিংটনের পদাঙ্ক অনুসরণের ঘোষণা দেন। সেসময় মরিসন বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও যতক্ষণ পর্যন্ত শান্তি অর্জিত হচ্ছে না, ততক্ষণ তাদের দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরছে না। এ বছরের মে মাসের নির্বাচনে মরিসনে সরকার ক্ষমতা হারায়। গতকাল মঙ্গলবার পেনি ওং আগের সরকারের পশ্চিম জেরুজালেম নিয়ে সিদ্ধান্তকে নির্বাচনে ইহুদি ভোটারদের মন জয়ের ‘নোংরা খেলা’ অ্যাখ্যা দেন। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে শান্তি আলোচনায় জেরুজালেমের মর্যাদা ঠিক হবে, অস্ট্রেলিয়া তার ‘পুরনো’ এই অবস্থানেই ফিরল বলেও জানান এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জেরুজালেমে এখন হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা ও কসোভোর দূতাবাস রয়েছে। যুক্তরাজ্যও এখন তাদের দূতাবাস ওই শহরটিতেই নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। ইসরায়েল অবিভক্ত জেরুজালেমকে তাদের ‘চিরন্তন’ রাজধানী বললেও ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েল এই অংশটুকু দখল করে নিয়েছিল। জেরুজালেমের ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব কখনোই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। ১৯৯৩ সালে হওয়া সমঝোতায় জেরুজালেমের মর্যাদা কী হবে, তা শান্তি আলোচনার একবারে শেষ পর্যায়ে ঠিক করে নিতে রাজি হয়েছিল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা।