ঢাকা থেকে ব্রিসবেনে আসার পথে সিঙ্গাপুরের ট্রানজিটে কিছুটা অসুস্থবোধ করেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া পৌঁছেই তাই সতর্কতা হিসেবে জালাল ইউনুস কভিড পরীক্ষা করিয়েই দেখেন পজিটিভ। এ কারণে কয়েকটি দিন নিজের হোটেলরুমে বন্দি হয়ে থেকেছেন বলেই কিনা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তৈরি হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দলের দূরত্বের বিষয়টি সেভাবে জানেন না বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধান। ব্রিসবেন থেকে এসে শনিবার বিকেলে হোবার্টের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে চেকইন করার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিষয়টি শুনতেই যেন আকাশ থেকে পড়লেন তিনি, ‘তাই নাকি? আমি তো জানি না। আমি বরং জানি যে কেউ না কেউ কথা বলে। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে নিশ্চয়ই কেউ কথা বলে। ’হ্যাঁ, টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যদের কেউ কেউ কথা বলেছেন, তবে সেটি নিয়মিত ছিল না। কয়েক দিনের বিরতি দিয়ে দিয়ে তাঁদের কেউ কেউ সংবাদমাধ্যমের সামনে এসেছেন, তবে অনুশীলন এবং অনুশীলনবিহীন দিনে ক্রিকেটাররা একদমই না। ব্যতিক্রম বলতে শুধু ব্রিসবেনে বিশ্বকাপের অফিশিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হারার পর, মোসাদ্দেক হোসেনকে সেদিন কথা বলতে পাঠানো হয়েছিল। এরপর বৃষ্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ ভেসে গেছে, বৃষ্টিতে অনুশীলন করতে না পেরে হোটেলে বিশ্রামে পার করা দিনও গেছে, বিরূপ প্রকৃতি কখনো ব্রিসবেনের ন্যাশনাল ক্রিকেট সেন্টারের ইনডোরেও ঢুকিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। সেসব দিনে কোনো একজন ক্রিকেটারকে কথা বলার জন্য চেয়েও পায়নি সংবাদমাধ্যম। কিন্তু কেন? তাঁরা নিজেরাই কি কথা বলতে চাইছেন না? নাকি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁদের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ভেতরে ভেতরে? এসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে নিতে পারেন খালেদ মাহমুদের কথা থেকে। যিনি নিজেও ইদানীং সংবাদমাধ্যম এড়িয়ে চলছেন। হোবার্টেই সুপার টুয়েলভ পর্বে বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টিম ডিরেক্টর জানালেন সংবাদমাধ্যমে কথা বলা নিয়ে অলিখিত এক নিষেধাজ্ঞা আছে তাঁরও। মাহমুদের বক্তব্য শুনে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে সেই নিষেধাজ্ঞা আরোপের পেছনের লোকটি বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানই, ‘‘আমি তো এমনিতেও কোনো সাক্ষাৎকার দিচ্ছি না এখন। তবু সেদিন আপনাদের এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কথাচ্ছলে তাঁকে বলছিলাম, ‘আপনারা টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে এত জানতে চান কেন? এগুলো দলের ভেতরের বিষয়, ভেতরেই থাকুক। ’ এটা আবার সাকিবও দেখেছে। দেখে সে খুব মাইন্ড করেছে। ও এসে আমাকে বলল, ‘আপনি এই কথা বলতে গেলেন কেন? আমরা তো বলেই দিয়েছি যে কথা বলব না। ’ এরপর নিজের কাছেই নিজেকে খুব ছোট লেগেছে। ’’ তাই মাহমুদও মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করছেন। যদিও ক্রিকেটাররা কেন কথা বলতে চান না, সেটি জানেন না বলেই দাবি করলেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক, ‘ওরাই কথা বলতে চায় না। কেন চায় না বা কী চায় না, সেটি ওরাই ভালো বলতে পারবে। ’