বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণ উদ্ভাবক স্কুল ছাত্র ওবায়দুল ইসলাম নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছেন ড্রেন ও খালের ময়লা পরিষ্কার করার একটি যন্ত্র। নাম দিয়েছেন অটো ড্রেন ক্লিনার। এটা চালাতে কোনো লোকবল লাগবে না। চলবে আধুনিক পদ্ধতিতে সেন্সরের বিশেষ সিগন্যালের মাধ্যমে। শহরের ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনামুক্ত করতে এই অটো ক্লিনার যন্ত্রটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে দাবি করেন ওবায়দুল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই আবিষ্কার সম্পর্কে জানাতে চান তিনি। সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই নতুন আবিষ্কার আলোর মুখ দেখবে এবং শহর-নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
তার এ অটো ড্রেন ক্লিনার নিয়ে ইতঃপূর্বে সংবাদ প্রকাশের পরে বেশ আলোচনায় আসে তরুণ উদ্ভাবক ওবায়দুলের অটো ড্রেন ক্লিনার।
এমনকি তৎকালীন বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমীনুল ইসলাম তার উদ্ভাবনী অটো ড্রেন ক্লিনার দেখে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং তার এ উদ্ভাবনী অটো ড্রেন ক্লিনার বাস্তবে রুপ পাওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এক বছর পেরেছি গেলেও আলোর মুখ দেখেনি ওবায়দুলের অটো ড্রেন ক্লিনার।
আর্থিক অভাব অনটনের কারণে ওবায়দুলের উদ্ভাবনী অটো ড্রেন ক্লিনার বাস্তবে রুপ দিতে না পারায় তার স্বপ্ন স্বপ্নেই রয়ে গেল।
রোববার সকালে সরেজমিনে ওবায়দুল এর
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, বাড়ির এক কোণে আধাশতক জায়গায় ছোট্ট একটি টিনের চালার নিচে কোনরকম মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওবায়দুল ও তার মা।
ওবাইদুল এর কাছে তার অটো ড্রেন ক্লিনার সম্পর্কে জানতে চাইলে ওবায়দুল বলেন, আপনারা যখন আসছিলেন আমার অটো ড্রেন ক্লিনার দেখতে তখন আমরা বড় মামার বাসায় থাকতাম। বড় মামা চাকরির সুবাদে সিলেটে থাকার কারণে তার বাসায় আমরা থাকতাম। মামা অবসরে আসার পর তার পরিবার নিয়ে সে তার বাসায় থাকেন। তার বাসায় তাদের নিজেদেরই থাকা কষ্টকর।
ওবাইদুল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল স্যার কে বাসায় এনে দেখেছিলাম বিষয়টা পরবর্তীতে স্যার কিছু আর্থিক হেল্প ও টিন দেয়ার কথা বলছিল। তখন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান স্যারও সাথে ছিল। এমনকি তৎকালীন ইউএনও আমিনুল ইসলাম স্যারকেও বলেছিলাম কিন্তু পরবর্তীতে আর এটার আর কোন সমাধান পাইনি আমি। বেঁচে থাকার জন্য টুকটাক ইলেকট্রিক কাজ করছি আর কিছু সরকারি চাকরির এপ্লাই করা আছে সেটার জন্য পড়ালেখা করছি।
ওবায়দুলের মায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে থাকতে একটু কষ্ট হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলে পানিতে সবকিছু ভিজে যায়। কষ্ট হচ্ছে তারপরও কি আর করার আছে। ছেলেটার একটা চাকরি হলে এত কষ্ট আর হবে না।
উল্লেখ্য, ওবায়দুল ইসলাম বরিশালের বাবুগঞ্জের মাধবপাশা ইউনিয়নের পাংশা গ্রামে মায়ের সঙ্গে মামাবাড়িতে বড় হন। তিনি বাবুগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ভোকেশনাল শাখায় জেনারেল মেকানিকস ট্রেডে মাধ্যমিক পাস করেন। পরে ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউট সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ডিপ্লোমা কোর্স করেন।