আশাশুনি উপজেলার এক সময়ের ঐতিহ্যমন্ডিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোদন্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে যখন গুছিয়ে নেওয়ার বাস্তবমুখী কাজ এগিয়ে চলেছে ঠিক তখন পুরনো ষড়যন্ত্রকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে নানা অজুহাত খাড়া করে বিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা রোধে বিভিন্ন সময় অপপ্রচার ও চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে জানাগেছে।
একসময়ের খুবই সুখ্যাত স্কুলটি দীর্ঘ পথ চলার পর একপর্যায়ে থমকে গিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, পরিবেশ, শিক্ষার মান পূর্বের তুলনায় অনেকটা নিচে নেমে গিয়েছিল। তখন এলাকার মানুষের প্রত্যাশাকে মূল্য দিতে এবং নিজের যৌবনকালের প্রতিষ্ঠান হিসাবে নৈতিক দায়িত্ববোধ মাথায় নিয়ে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ছরোয়ার হোসেন স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার মানসিকতা বুকে ধারন করে এগিয়ে আসেন। তিনি উন্নয়নমূলক কাজের ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু করেন। স্কুলের উন্নতির ছোঁয়া পেতে শুরু করার মূহুর্তে আসে স্কুলের নির্বাচন। নির্বাচনে যখন প্রার্থীরা স্বতঃস্ফুর্ত, তখন ভোটার তালিকার ত্রুটির অভিযোগ এনে ইউএনও বরাবর আবেদন করলে আইনগত সমস্যা নেই বলে জানান হয়। এরপর অভিভাবক দুলাল অধিকারীকে বাদী করে ষড়যন্ত্রকারীরা আদালতে মামলা ঠুকে দেয়। বিজ্ঞ আদালতে টিকতে না পেরে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে পক্ষটি। নির্বাচন যথাযথ ভাবে হয়ে যায়, আলহাজ্ব সরোয়ার হোসেনকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠানের পর পরাজিত পক্ষ নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। নবাগত সভাপতি কার্যক্রম শুরু করার আগেই প্রধান শিক্ষক দুখীরাম ঢালীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে অনৈতিক ও অশালীনতার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করা হয়। ফলে কমিটি ও শিক্ষকবৃন্দসহ অভিভাবকদের মধ্যে সৃষ্টি হয় ভিন্ন চিত্র। ক্লাস পরিচালনাসহ বিভিন্ন কাজে দেখা দেয় শৈথিল্যতা।
পরবর্তীতে মামলা আদালতে চলমান এবং প্রধান শিক্ষক জামিনে থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সভাপতি ছরোয়ার সাহেবের নেতৃত্বে স্কুলে উর্দ্ধমূখি ২য় ও ৩য় তলার কাজ চলছে। যার ব্যয় বরাদ্দ ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। ৮ লক্ষ টাকা বাজেটে নিচ তলায় গ্রীল ও প্রাচীরের গেট নির্মান কাজের ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির প্রকল্প ৪ লক্ষ টাকার কাজ প্রক্রিয়াধীন। তার ব্যক্তিগত তহবিল হতে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এবং ব্র্যাকের ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অর্থায়নে আম্ফান পরবর্তী সংস্কার কাজ করা হয়েছে। উন্নয়ন কাজের পাশাপাশি স্কুল পরিচালনা সুষ্ঠু করতে সরকারি বিধি মোতাবেক পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগদানের জন্য যথারীতি কার্যক্রম করা হচ্ছে। ৩১ জন প্রার্থী ৩টি পদে পরীক্ষা দিবে। এবারও ঘড়যন্ত্রকারীরা থেকে থাকেনি, আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগদান করা হবে এমন অমূলক, অলীক ও মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রচার প্রচারনা চালান হচ্ছে। যাতে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষাদানের পরিবেশ, মান উন্নয়ন ও অগ্রসর কাজে প্রতিবন্ধকতা ও জটিলতা সৃষ্টি করা যায় সেজন্য অলক্ষ্যে থেকে ষড়যন্ত্রকারীরা কাজ করে যাচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক দুখীরাম ঢালী ও সভাপতি আলহাজ্ব ছরোয়ার হোসেন জানান, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বোর্ড সদস্যবৃন্দ একেবারেই নিয়ম মেনেই পরীক্ষা পরিচালনা করবেন। কোন প্রকার তঞ্চকতা, দুরভিসন্ধিতার অবকাশ থাকবেনা। নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমরা উদাহরণ সৃষ্টি করতে আগ্রহী। কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে তারা উড়িয়ে দেন।