গত বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং অডিট রিপোর্ট পাস হয়েছে ‘এক মিনিটে’। এক-দুজন কাউন্সিলর বাদে বাকিরা সন্তুষ্ট বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কার্যক্রম নিয়ে। বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও জানালেন তুষ্টির কথা। বললেন, জেলা লিগ নিয়ে পুরান মাথা ব্যথার কথাও। রাজধানীর একটি হোটেলে শনিবার বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় আরও অনেক বিষয়ের সঙ্গে উঠে আসে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের সাফল্য এবং ছেলেদের ফুটবলের ব্যর্থতার প্রসঙ্গ। সংবাদ সম্মেলনে জেলা লিগ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন সালাউদ্দিন। নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে, জেলাগুলো বাফুফের দিকে তাকিয়ে থাকে বলে হতাশ তিনি। “সবচেয়ে বড় সমস্যা জেলা নিয়ে। আমরা যে লিগ করি, এটা করতে ফিফা কিন্তু আমাকে বাধ্য করে না। তারপরও আমি এটা আয়োজন করি। এটাই আমার কাজ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, অনেকে নিজেদের জেলায় লিগ করেন না, ওঁরা তাকিয়ে থাকে আমাদের দিকে, আমরা কিভাবে সাহায্য করব, সেদিকে।” “এই সমস্যা এখনও সমাধান করতে পারছি না। কেননা, আমি আমার কাজ করতে পারি, তাদের কাজ করতে পারি না। আমি কেবল তাদের সাহায্য করতে পারি। তারা খালি টাকা চায়, আমিও টাকা চাই, তারাও টাকা চায়। আমার কাছে যখনই টাকা এসেছে, তাদেরকে দিয়েছি। এর আগে সরকারের কাছ থেকে যে টাকা এসেছিল তার ৫০ শতাংশ তাদের দিয়েছি। টাকা থাকলে তো টাকা দিব, না থাকলে কিভাবে দিব?” গত আর্থিক বছরে বাফুফের ব্যয় ৩৩ কোটি ৭৯ লাখ ৪১ হাজার টাকা, আয় ২৮ কোটি ৮০ লাখ আট হাজার টাকা। ঘাটতি ছিল প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। নতুন আর্থিক বছরে আট কোটি টাকার সম্ভাব্য ঘাটতি ধরে নতুন বাজেট করেছে বাফুফে। সেখানে সব খাত থেকে সম্ভাব্য আয় ৪১ কোটি ৯৫ লাখ ধরা হয়েছে। ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাফুফে সভাপতি। “কংগ্রেস খুবই শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তাদেরকে এবার বিস্তারিত বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিভাবে কি হচ্ছে, আর্থিক বিষয়, প্ল্যানিং-সব বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। কংগ্রেস শেষ হওয়ার পর ওঁরা যখন কথা বলেছেন, তাদেরকে সন্তুষ্ট দেখা গেছে। অবশ্যই দু-একজন তো থাকবেই, যারা সন্তুষ্ট হবে না। কিন্তু সার্বিকভাবে সবাই সন্তুষ্ট।” “গতবারের অডিট-এক মিনিটের মধ্যে পাস হয়েছে। অডিটটা দেখেই তারা বলেছে সব ঠিকঠাক আছে। অডিট রিপোর্ট নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, তারা আমাদের উপর ছেড়ে দিয়েছে, আমাদেরই দায়িত্ব এটা জোগাড় করা। যেহেতু আমরাই অর্থ জোগাড় করি-এ কারণে কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। আমরা আশা করি, এই ঘাটতি আমরা পুষিয়ে নিতে পারব।” সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ছেলেরা টানা চার আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। মেয়েরা গত মাসেই নেপালকে ফাইনালে তাদের মাঠে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে। এজিএমে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সালাউদ্দিন। “কেউ তোলেনি (ফুটবলের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি)। আমিই বলেছি। সবশেষ সাফে মেয়েদের সাফল্যের কথা বলেছি। ছেলেদের দল নিয়ে কাজ হচ্ছে বলেও জানিয়েছি। আশা করি, ছেলেদের ফুটবলেও আমরা ফল পাব।” ফিফা থেকে কাউন্সিলরের সংখ্যা কমিয়ে আনার নির্দেশনা আছে। সেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান সালাউদ্দিন। কাউন্সিলরদের সঙ্গে আগামীতে বন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি। “একটা কংগ্রেস করতেও আমাদের ৩০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। আমাদের তো বিদেশিদের মতো (ফেডারেশনগুলোর মতো) আয় নাই। কিন্তু আমরা কাউন্সিলরদের সঙ্গে বন্ধন আরও দৃঢ় করার জন্য আমরা কংগ্রেস ধারাবাহিক রাখব, যা যা করার করব।”