সরাইলে দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ফারজানা বেগমের আগামী ১৬ নভেম্বর বুধবার গাঁয়ে হলুদ। বৃহস্পতিবারে বিয়ে। ফারজানা উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বেড়তলা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তার শ্রেণি রোল নম্বর এক। বলিবাড়ি গ্রামের দুবাই প্রবাসী লোকমান মিয়ার মেয়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন ফারজানার এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। এটি বাল্য বিয়ে। এই বয়সে বিয়ে দিলে ঝড়ে যাবে একটি জীবন। মৃত্যু ঘটবে একটি সোনালী স্বপ্নের। সরজমিন অনুসন্ধানে বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফারজানারা ১ ভাই ১ বোন। পিতা লোকমান মিয়া ১৬ বছরেরও অধিক সময় ধরে দুবাই আছেন। ফারজানা বেড়তলা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের একজন মেধাবী ছাত্রী। তার শ্রেণি রোল নম্বর এক। আগামী মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফারজানা উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব অর্জনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনার প্রত্যাশায় রয়েছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ের নথিপত্র অনুসারে ফারজানার জন্ম তারিখ ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ২ ডিসেম্বর। সেই সূত্রে শুক্রবার পর্যন্ত তার বয়স ১৫ বছর ১০ মাস ৮ দিন। তারপরও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ফারজানার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলেছেন অভিভাবকরা। আগামী ১৬ নভেম্বর বুধবারে গাঁয়ে হলুদ। আর ১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ঘটা করে বিয়ের অনুষ্ঠান হবে ফারজানাদের বাড়িতে। বিয়ের প্রস্তুতি ও দাওয়াতের কাজ চলছে পুরোদমে। পাত্র সরাইল সদর ইউনিয়নের গুনারা গ্রামের প্রয়াত কামাল মিয়ার ছেলে শামীম মিয়া (২৫)। ফারজানার মা রাফিয়া বেগম অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে মেধাবী ছাত্রীর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করার কথা স্বীকার করে বলেন, ওর বাবা অসুস্থ্য। আমিও অসুস্থ্য। দু’জনই মারা গেলে মেয়ের বিয়েটা কে দিবে? পাত্রীর মা বাবা কেউ নেই। এই কথার উপর বিয়েটা নিয়ে আরো সমস্যা হয়ে যাবে। তাই সরকারী চাকরিজীবী পাত্র পাওয়ায় বিয়ে দিচ্ছি। ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রতন মিয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। পানিশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দশম শ্রেণির ছাত্রী! সে তো প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি। বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমি জানি না। আপনি যখন বলছেন আমি এখনই খুঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব। সরাইল উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জান্নাত সুলতানা বলেন, এই বাল্যবিয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন জানলাম। দেখছি।