মাওলানা নামের কিছুু ধর্মান্ধরা বলে থাকেন নবান্ন হচ্ছে হিন্দুদের জন্য। মুসলমান ধর্মের মানুষদের এটা পালন করা জায়েজ নয়। ওদের এ ধরণের কথা যে মন গড়া এবং ধর্মবিদ্বেসী তার প্রমান মেলে বাংলা অগ্রহায়ন মাসের প্রথম দিন গ্রামে গ্রামে ঘুড়ে স্বচক্ষে দেখলে। বুধবার সকাল থেকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার শালগ্রাম, কালাইকুড়ি, সাগরপুর, কাল্লাগাড়ী, কৈকুড়ি, কোমারপুর, কোমারভোগ সহ বেশ কিছু গ্রামে ঘুড়ে দেখা গেল এসব গ্রামে কোন হিন্দু ধর্মাম্বলী নেই। কিন্তু আছে বাঙ্গালীর ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব। এ উৎসব পালন উপলক্ষে প্রতিটি বাড়ীতে জড়ানো হয়েছে মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনি ও আত্মীয় স্বজন। উৎসবটি পালন কর হচ্ছে ঈদের আমেজে। গ্রামের প্রতিটি বাড়ী থেকে বাতাসে ভেঁসে আসছিল উন্নত মানের খাবার বিশেষ করে মহিষ ও গরুর গোস্ত রান্নার সুবাস। নবান্ন উৎসব পালন উপলক্ষে ওই সব গ্রামসহ আশপাশের প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রামে প্রতি বছরের মত এবারো জবাই করা হয়েছে মহিষ ও গরু। গ্রামের প্রতিটি পাড়া মহল্লা ও মোড়ে মোড়ে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী চুড়ি-ফিতা, আলতা ও বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী এবং জিলাপী, রসগোল্লা, চমচম, বাতাসা, মুড়কি ও পাঁপড় ভাজা সহ মূখরোচক নানান পন্যের মেলা। পাশাপাশি তৈরী হতে দেখা যায় মঞ্চ। যেখানে রাতের বেলা বসবে জারিসারি আর পালা গানের আসর।
বুধবার উপজেলার শালগ্রামে গিয়ে কথা হল দিলবর আলী নামের এক ব্যক্তির সাথে। তিনি ক্ষুদ্ধস্বরে বলেন, ওরা আসলে মিথ্যা কথা বলে ধর্মপ্রান মানুষকে বিভান্ত করে। নবান্ন কোন ধর্মের নয়, এটা বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। পূর্ব পূরুষরাও এ উৎসব পালন করেছে আমরাও করছি। ছেলে-মেয়ে সাথে জামাই আর নাতি-নাতনি ও নিকট আত্মীয় নিয়ে নতুন ধানের চালের ভাত গোস্ত খাওয়ার আনন্দই অন্য রকম। এর সাথে ধর্মের লেজুর জুড়ে দেওয়া ঠিক নয়। একই ধরণের কথা বলেন, কোমারভোগ গ্রামের নূর ইসলাম এবং উপজেলা কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সভাপতি শালগ্রাম নিবাসী মিজানুর রহমান বাবু।ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল হক আবু বলেন, পুর্ব পুরুষের আমল থেকেই উপজেলা এভাবে নবান্ন উৎসব পালন হয়ে আসছে। আর দিন দিন এ উৎসব পালনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোট কথা গ্রাম বাংলায় নবান্ন উৎসব পালন করা হয় অনেকটা ঈদের আমেজে।