বাংলাদেশে খাদ্যসংকট বা দুর্ভিক্ষের কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোমেইনিকো স্কালপেলির নেতৃত্বে সংস্থার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ কথা জানান। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন আমন ধান কাটা চলছে। তিনি (ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর) আমাকে বলেছেন যে তাদের কাছে তথ্য আছে, কোনোভাবেই বাংলাদেশে খাদ্যসংকট বা দুর্ভিক্ষ হওয়ার সামান্যতম শঙ্কা নেই। তবে যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক ইস্যু, তাই এটা নিয়ে তিনি সরাসরি কথা বলবেন না। আমি জানতে চেয়েছিলাম, তাকে রেফার করতে পারবো কি না। তিনি তাতে সম্মতি দিয়েছেন। আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন মাল্টিলেটারাল ডোনার আমরা যেটা বলি, তারা অনুমান করছে পৃথিবীতে একটি খাদ্যসংকট হওয়ার শঙ্কা আছে। কাজেই এটাকে বিবেচনায় নিয়েই কাজ করছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য ডব্লিউএফপি সহযোগিতা করছে। এ মুহূর্তে ছয় বছর যাবত রোহিঙ্গাদের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন, সেটিও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মাধ্যমেই দেওয়া হয়। ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সংকটের কথা অনেকেই বলছেন, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে তারা কীভাবে দেখছেন এবং কীভাবে ভবিষ্যতে এখানে তারা কাজ করবেন। এমন অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখনো তারা খুব সামান্য সাহায্য দেয়। এখন আমরা তেমন কোনো খাদ্য সহযোগিতা গত ১৫ বা ১২-১৩ বছর ধরে নেইনি। তিনি বলেন, ইউএসএইড বছরে এক লাখ টনের মতো গম আমাদের দিয়ে থাকে। এটা ছাড়া বিদেশ থেকে আমরা কোনো খাদ্য সহযোগিতা গ্রহণ করিনি। শঙ্কার মধ্যেও এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের এবার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়েও ভালো ধান হয়েছে। আগামী মৌসুমের জন্য দেশে পর্যাপ্ত সার মজুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বলি, গরিব মানুষ আছে, তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। সীমিত বা নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তবে টাকা নিয়ে খাবার কিনতে পারছে না- এমন পরিস্থিতি হয়নি। আগামী আলু ও বোরোর জন্য যে সার দরকার আমাদের তা আছে। সর্বাত্মক প্রস্তুতিও রয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদনে সমস্যা না থাকলেও বণ্টনে সমস্যায় দাম বাড়ছে, এ ক্ষেত্রে সরকার কি ভাবছে- জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের জন্য খুব বিব্রতকর। উৎপাদন আসলেই খুব ভালো হচ্ছে। এগুলোর সামাজিক-রাজনৈতিক কিছু সমস্যা আছে। আমি এটা অস্বীকার করবো না। ক্যারিং খরচ তারপর নানা ভোগান্তি তো আছেই। আমার মনে হয় আগামী ৬-৭ দিনে সারাদেশ শীতের সবজিতে ভরে যাবে এবং এগুলো কেনার মানুষ পাওয়া যাবে না। তিন-চারদিনেই দাম অর্ধেক হয়ে গেছে।