দূর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না সরাইল সদর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। এক ইউপি সচিব রূবেল জ্বালিয়ে পুঁড়িয়ে ছারখার করছে এখানকার সুবিধা ভোগীদের। দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলাসহ অগণিত অনিয়মের কারণে গত ২ নভেম্বর জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত এক পত্রে সরাইল সদর ইউপি সচিব মো. রূবেল ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ৩ নভেম্বর থেকে চলছে বরখাস্ত। গত ৭ নভেম্বর কর্তৃপক্ষের আদেশে সরাইল সদর ইউনিয়নে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে যোগদান করেছেন কালীকচ্ছ ইউপি সচিব মো. রিয়াজুল করিম। ২১ দিন চলে গেলেও দায়িত্ব হস্তান্তর করছেন না জুয়েল। ফলে এই পরিষদের অধিকাংশ গুরূত্বপূর্ণ কাজ আটকে আছে গত ৩ সপ্তাহ ধরে। দিনে রাতে ঘুরছেন সুবিধাভোগী নারী পুরূষরা। চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার যেকোন সময় পরিষদে হাতাহাতি ঘটার শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
অনুসন্ধানে ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, গত ৮ মে সরাইলে যোগদান করেছিলেন রূবেল ভূঁইয়া। যোগদানের পর থেকেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, অনিয়মিত উপস্থিতি, অনিয়ম করে জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু, কর্তব্যে অবহেলা, কর্তৃপক্ষের আইনসঙ্গত আদেশ অমান্য করা ও সুবিধাভোগীদের অযথা হয়রানির অভিযোগ ছিল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লোকজন অফিসের সামনে বসে অপেক্ষা করলেও সচিব রূবেলেন দেখা মিলে না। দলিল রেজিষ্ট্রি, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যুর সনদ সহ জরূরী কাজ সমূহ আটকে যায়। ক্রমেই ক্ষুদ্ধ হতে থাকেন স্থানীয়রা। রূবেলের বিরূদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার। তাকে একাধিকবার কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা। এরপরও লাগামহীন ভাবে চলতে থাকে তার অনিয়ম, দায়িত্বে অবহেলা ও অফিস ফাঁকির কাজ। অবশেষে স্থানীয় সরকার কর্মচারী (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০১১ এর বিধি ৪০ অনুযায়ী গত ২ নভেম্বর জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত এক আদেশে ৩ নভেম্বর ২০২২ খ্রি. তারিখ হতে রূবেল ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কর্তৃপক্ষের আদেশে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মো. রিয়াজুল করিম সরাইল সদরে যোগদান করেন গত ৭ নভেম্বর। কিন্তু গত ২১ দিন ধরে দায়িত্ব হস্তান্তরে তালবাহানা করছেন রূবেল। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও কথা দিয়ে কথা রাখছেন না। আর রিয়াজুল করিমকেও আজ কাল বলে ঘুরাচ্ছেন। রিয়াজুল করিম বলেন, ৩ সপ্তাহ ধরে শুধু আসছি আর যাচ্ছি। পরিষদ রূবেলের কাছে ৫০ হাজার টাকা পাবে। হিসাবও দিচ্ছে না। টাকাও দিচ্ছে না। কাজ করার পাসওয়ার্ডটিও দিচ্ছেন না। আজ (বুধবার) সকালে আসবেন বলেছিলেন। কিন্তু সারা দিনেও আসেননি। মানুষের কাজের পাহাড় জমছে। কিভাবে এই কাজ গুলো করব ভেবে পাঁচ্ছি না। সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার বলেন, জনগন আমিসহ সকল জনপ্রতিনিধিদের উপর ক্রমেই ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন। সকল ভাল কাজের কবর রচনা করেছেন সচিব রূবেল। যেকোন সময় পরিষদে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে যাওয়ার শঙ্কায় আছি। সে ইচ্ছে করে পরিষদকে অচল করার পায়তারা করছে। তবে বরখাস্তকৃত ও অভিযুক্ত ইউপি সচিব মো. রূবেল ভূঁইয়ার মুঠোফোনে (০১৩০৭-৬২১৭৮৪) একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন, রূবেল আজ কালই আসবেন। সব কিছু বুঝে রেখে কথা বলে সমাধান করে নিব। এরপরও যদি না আসেন তার বিরূদ্ধে ফৌজধারী ব্যবস্থা নেব।