সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় শত বছরের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমিটি গঠণ এবং শিক্ষকদের দ্বন্দে ধ্বংসের মুখে পরেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
একইসাথে চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে, প্রধানশিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা আর পকেট কমিটি গঠণ করার চেষ্টা করায় দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি গত তিন মাস ধরে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ রয়েছে। এতে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন অভিভাবকসহ স্থানীয় সচেতন মহল।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ঐতিহ্যবাহী কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সু-শৃংখলভাবে পরিচালিত হলেও বর্তমানে অভ্যন্তরীন দ্বন্দে ভেঙ্গে পরেছে শিক্ষার মানসহ নানা অবকাঠামো। তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রধানশিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতা করে পকেট কমিটি গঠণ করার চেষ্টা করছেন। এমনকি প্রধানশিক্ষকসহ দুইজন শিক্ষিকা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছেন না। যেকারণে শিক্ষকদের অনিহায় কমতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সাধারণ শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, আমরা যে কয়েকজন শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস করিয়ে আসছি, কমিটি না থাকায় তারা গত তিন মাস পর্যন্ত বেতন পাচ্ছিনা। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরো অভিযোগ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননার কারণে প্রধানশিক্ষক শফিকুল ইসলামের সম্প্রতি কারাভোগ করে জামিনে বের হয়েছেন। সেই থেকে তিনি খামখেয়ালীভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করতে গিয়ে নানা বির্তকের সৃষ্টি করেছেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধানশিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকের অসৎ কাজে বাঁধা দেয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে অসৎ কাজগুলো কি এবং শিক্ষকদের তিন মাসের বেতন বন্ধ থাকার ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষনা কর্মকর্তা নিটুল মন্ডল বলেন, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কমিটি, প্রধানশিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষকরা অপরাধ বা দুর্নীতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারলেই যেমন রক্ষা পাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তেমনি অটুট থাকবে শিক্ষার মান। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ ॥ অপরদিকে জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল অনাথবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিসহ প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে অফিস সহকারী ও আয়া নিয়োগে মোটা অংকের টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার সকাল থেকে ওই এলাকা ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এনায়েত সিকদার অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে আয়া পদে আবেদন করেছে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্য ও প্রধানশিক্ষক আমার মেয়েকে আয়া পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম সরদার বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। এনায়েত সিকদারের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। ঘটনাটি তদন্তের মাধ্যমে প্রমানিত হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।