বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, হুমকি দিয়ে সরকার পতন করা যাবে না। আগামী নির্বাচনে খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, দূর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে লুৃটপাটের বিরুদ্ধে। ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে এই ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে। আন্দোলন হলে রাজপথ, জনপথ, শহর, পাড়া-মহল্লা ইউনিয়ন ও জেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ডাক দিয়ে যাবেন, মহাসমাবেশ কাকে বলে চট্রগ্যামে বুঝিয়ে দেবে। তিনি বলেন, রাজশাহীতে বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ হচ্ছে, জনসমাগম নেই। মাঠ ফাঁকা। আর ময়মনসিংহে একটি মাত্র জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। সেখানে জনতার ঢল। তিল ধারণের ঠাঁয় নেই। লাখো মানুষের ঢল নেমেছে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগরের সম্মেলনে।
ওবায়দুল কাদের এমপি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ফখরুল সাহেব, খেলা হবে। দেখা যাবে ‘কত ধানে কত চাল’। অপেক্ষা করুন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস, স্বাধীনতার মাস, মুক্তিযুদ্ধের মাস। ডিসেম্বর মাস বঙ্গবন্ধুর মাস, শেখ হাসিনার মাস, মুক্তিযোদ্ধাদের মাস, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মাস, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাস।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঔতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন শেষে সম্মেলনের শুরুতেই প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এমপি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বাংলার ইতিহাস বিশ্বাস ঘাতকতার ইতিহাস, সংগ্রামের পাশাপাশি এই বাংলার ইতিহাস ষড়যন্ত্রের ইতিহাস। সংগ্রাম, ষড়যন্ত্র, বীরত্ব, বিশ্বাসঘাতকতা এই দুই মিলে বাংলাদেশ-বাঙ্গালীর ইতিহাস। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারি পলাশীর মির্জাফরের জায়গায় খন্দকার মোস্তাক, খুনি মোস্তাক। পলাশীর সেনাপতি এআর লতিফের জায়গায় সেনাপতি জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের মাস্টার মাইন্ড আর তার পুত্র হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান। তিনি বলেন, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা এবং আইভি রহমানসহ ২৩ জনের প্রাণহানির প্রধান নায়ক তারেক রহমান। তার নির্দেশে হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলো। সেনাপতি জিয়া ৩রা নভেম্বর আমাদের নেতৃত্বহীন করতে ২১শে আগস্ট সেই জিয়া’রই সন্তান হাওয়া ভবনের যুবরাজ। সেই যুবরাজ ২০০৮ সালে আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়েছে। তিনি বলেন, ফখরুলের বর্তমান নেতা পাড়ি জমিয়েছে টেমস নদীর পাড়ে লন্ডনে, সেই থেকে পলাতক। আর ওখানে বসে বসে হুঙ্কার ছুড়ে সরকার পতনের। তিনি বলেন, ফথরুল সাহেব, এই তারেক রহমান গতকালও ঢাকায় একজন ক্যাডারের সঙ্গে কনভরসেশান করেছে। কনভারশেসনে তারেক বলেছে, হাসিনা পালাবার পথ খুজছে, হাসিনার মন্ত্রীরা পালাবার পথ খুজছে। তোমরা রাস্তা ছাড়বে না। সেখান থেকে বলছে ঢাকা সিটি রাস্তা আমাদের দখলে থাকবে।’
ওবায়দুল কাদের বিএনপি’র সমালোচনা করে বলেন, ফখরুল সাহেব, রাস্তা বন্ধ করবেন? রাজশাহীতে দেখলাম, এখন আবার ঢাকায়। কবে দশ তারিখ, তার আগেই নয়াপল্টন এলাকা তাবু বানিয়েছে। শুধু তাবু গাড়েনি হান্ডি-পাতিল, বিছানা-বালিশ, কম্বল সঙ্গে মশার কয়েল সব নিয়ে আসছে। সাতদিন আগে থেকে এসেছে ঢাকায়, কোথা থেকে পেলেন এই টাকা?
সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির রহস্য পুরুষ কামাল হোসেন। তারেক রহমানের পাঁচার সুইজ ব্যাংকের টাকা কারা রেখেছে, অর্থ পাঁচার কারা করেছেন, তারা যে দলেরই হোক, সবার অর্থের উৎস খোঁজা হচ্ছে এবং এদের শাস্তি পেতে হবে। এটা শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এই বার্তা দিয়ে গেলাম। তিনি বলেন, কুমিল্লার বিএনপি’র সমাবেশ থেকে ৭১টি মোবাইল চুরি গেছে। এজন্য ৭টি মামলা করেছে বিএনপির বিরুদ্ধে বিএনপি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এমপি, দলের যুগ্ন সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম এমপি ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও রেমন্ড আরেং, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি, জুয়েল আরেং এমপি, কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু এমপি, মনিরা সুলতানা মনি এমপি, সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এদিকে সম্মেলনকে সফল করতে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেষ্টুন ও মিছিল নিয়ে দলে দলে সভাস্থলে যোগ দেন। বেলা ১২টায় সম্মেলন স্থল খন্ড খন্ড মিছিলে জনসমুদ্রে পরিনত হয়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, সম্মেলনের মাধ্যমে দলের ত্যাগী নেতা বেরিয়ে আসবে। যারা আগামী দিনের লড়াই-সংগ্রাম ও আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখবে।