বিএনপিকে সমাবেশ করতে হলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই যেতে হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) বলেছেন, এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। রাস্তাঘাটে মিটিং করে মানুষের জান-মালের ক্ষতি করলে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে, আমরা হাতে চুড়ি পরে বসে থাকব না। বুধবার চাঁদপুর জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ওচমান গনি পাটওয়ারীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ প্রায় ৫০ বছর। এর মধ্যে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল মাত্র সাড়ে ২২ বছর। বাকি ২৮-২৯ বছর ক্ষমতায় ছিল স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। এরা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। এই ২৯ বছর অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, জেলে পাঠানো হয়েছে। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের রক্তে ভেজা পতাকা নিচে নামিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অতীতে রাজাকার, আলবদর, আল শামসদের গাড়ি-বাড়িতে তারা বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছে। এখন যত সন্ত্রাসী আছে, তাদের হাতে বাঁশের মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে দিয়েছে। ১০ ডিসেম্বর নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা ১০ তারিখ আমরা পাড়া মহল্লায় পাহারা দিব। কারণ বিএনপির নেতাকর্মীদের অভ্যাস খারাপ। তাদের হাত দুটো পকেটে থাকে না, বাইরে থাকে। তারা কোন জায়গায় মানুষের দোকানপাটে হাত দেয়, সেজন্য আমাদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ১০ তারিখ সারাদিন আমরা রাজপথে থাকব, মানুষের পাশে থাকব, জনগণের পাশে থাকব। জনগণের জান-মাল রক্ষার্থে তাদের পাশে থাকবো। এতে কোনো অপরাধ নেই। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দলের সরকার। দলের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব সরকারকে রক্ষা করা। সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা। সরকারের ওপর যদি কোনো আঘাত আসে, তাহলে কর্মীদের সবার আগে রাস্তায় নামতে হবে সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য। মায়া বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দলের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। আরও বলেছেন, তারেক রহমান শিশু মুক্তিযোদ্ধা। এত বড় রাজনৈতিক দলের নেতা এভাবে যদি ইতিহাস বিকৃত করে, তাহলে এদেশের অবস্থা কী হবে? তাদের হাতে যদি ক্ষমতা যায়, তারা কী করবে বলতে পারেন? এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে, ইতিহাস রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, কেউ যদি ইতিহাস বিকৃত করে, তাহলে সে যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে। তাই আপনারা সজাগ থাকবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পবিত্র দায়িত্ব দেশ রক্ষা করা, মানুষের জানমাল রক্ষা করা। ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মিঞা মো. জাহাঙ্গীল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ শফিকুর রহমান। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের উপদেষ্টা মো. মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. তাহের হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ।