বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের পোড়াদহ, ছয়মাইল এলাকায় কৃষি জমিতে এক্সভেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে চলছে পুকুর খননের কাজ। এরপরে ঢাকনাবিহীন ট্রলি ও ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছে সেই মাটি। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পুকুর খনন ও মাটি বহনে নষ্ট হচ্ছে রাস্তার স্থায়িত্ব। এ ছাড়া খোলা যানবাহনে বহনের কারণে রাস্তার ওপর পড়ে জমছে মাটির আস্তরণ। এতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সেইসাথে ধুলা উড়ে পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকসহ যাত্রীরা দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন।
এলাকাবাসীরা জানান, পুকুর খনন ও মাটি ব্যাবসায়ী মহিষাবান ইউনিয়নের রানীর পাড়া গ্রামের আবদুস সামাদ, ছয়মাইল এলাকায় কুখ্যাত জুয়ারু হাম্বি, একই এলাকার হাম্বির ভাগিনা মাসুদ, চকমড়িয়া গ্রামের আবদুল হান্নান, কর্নিপাড়া গ্রামের আবু সাঈদ, মাহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শাহজাহান আলী ও আবদুল রাজ্জাক ওরফে চিকে রাজ্জাক। শীত মৌসুম এলেই ফসলি জমির মাটিকে প্রধান টার্গেট করে বছর শুরু করে চলে তাদের মাটি বিক্রির রমরমা ব্যবসা। এতে হারিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে অভিযান পরিচালনা করেও কিছুতেই বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভূমি দস্যুরা সরকার দলীয় এবং এলাকার প্রভাবশালী হওয়াতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নির্বিচারে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাশের জমির এক কৃষক বলেন, এ পুকুর খননের জন্য তাদের ফসলসহ জমিও নষ্ট হচ্ছে। পুকুর খননের কারণে জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হবে। আমার জমি ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে চলে যাবে। আমরা বাধা দিয়ে বিভিন্ন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি। তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি যাতে করে আমরা কৃষকেরা বাঁচতে পারি।
এ বিষয়ে ভূমি দস্যুদের কথা বললে তারা জানান, সব কিছু ম্যানেজ করেই পুকুর ও মাটি খননের কাজ করেছি। আর ট্রলিতে করে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণাধীন ভবন, ডোবা, পুকুর ও ভরাটসহ বিভিন্ন কাজে এই মাটি বিক্রি করছি। তারা আরো জানান, আপনারা পত্রিকাতে রিপোর্ট করে কি করবেন যেখানে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কোন মাথা ব্যাথা নাই আপনাদের কেন এত মাথাব্যথা?
মহিষাবান ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ জানান, আমার ইউনিয়নের মধ্যে এমন কাজ কেউ করে থাকলে অবশ্যই দ্রুত বন্ধ করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করবো।
গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান আল-ইমরান জানান, সরকারি সম্পদ বা জনগনের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজন সরেজমিনে গিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।