সরকারী হাসপাতালে পথ্য সরবরাহকারীর কাছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পাসের্ন্টিজ দাবী করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার দাবীকৃত ১০% দেয়া না হলে বিলে স্বাক্ষর করবেন না বলেও হুমকি দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেলার গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালের।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই হাসপাতালের পথ্য সরবরাহকারী (ঠিকাদার) ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আহাদ মিয়া রাসেল অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের মাঝে আমি দীর্ঘদিন থেকে পথ্য সরবরাহ করে আসছি। বিগত সময়ে পথ্য সরবরাহের জন্য কোন প্রকার ঘুষ দেয়া লাগেনি। তবে বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মনিরুজ্জামান হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে আমার কাছে ১০% করে দাবী করে আসছেন। অন্যথায় বিলে স্বাক্ষর করবেন না বলেও হুমকি দেয়া হয়।
ঠিকাদার আরও অভিযোগ করেন, নিরুপায় হয়ে আমি তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেলে তিনি তা ফিরিয়ে দিয়ে ১০% দাবীর বিষয়ে অনঢ় রয়েছেন।
জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে দিতে হয় টাকা ॥ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছ থেকেও অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিক রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, হাত ও পায়ে জখম নিয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে রোগী প্রতি চিকিৎসকদের টাকা দিতে হয়। অন্যথায় চিকিৎসা না দিয়ে উন্নত চিকিৎসার অযুহাত দেখিয়ে বরিশালে প্রেরণ করা হয়।
তিন টাকার টিকিট পাঁচ টাকায় বিক্রি ॥ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগে টিকিট বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী বর্হিবিভাগে ডাক্তার দেখাতে রোগীপ্রতি টিকিটের মূল্য তিন টাকা নির্ধারিত হলেও এ হাসপাতালে আদায় করা হচ্ছে পাঁচ টাকা করে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা লাইনে দাঁড়িয়ে বর্হিবিভাগে টিকিট কাটছেন। টিকিটের মূল্য হিসেবে তাদের কাছ থেকে পাঁচ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে টিকিট ক্লার্ক জাবেদ হোসেন বলেন, তিন টাকা করেই রোগীদের কাছ থেকে টিকিটের মূল্যে নেয়া হয়। তবে অনেক সময় ক্যাশে কিংবা রোগীদের কাছে খুচরা টাকা না থাকায় রোগীরা পাঁচ টাকা দিয়ে যায়। এক্ষেত্রে কারো কাছ থেকে জোর করে আদায় করা হচ্ছেনা।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মনিরুজ্জামান বলেন, হাসপাতালের পথ্য সরবরাহকারীর অনিয়মের বিষয়টি মেনে না নেয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার করছে। তার কাছে কোনধরনের পার্সেন্টিজ দাবী করা হয়নি। টিকিটে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও জরুরি বিভাগে টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালে সবকিছু সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে। তারপরেও অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।