গ্যাস সংকটে দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর যমুনা সার কারখানার উৎপাদন শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নানাদিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে সার উৎপাদন শুরু করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে উপজেলার তারাকান্দিতে যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে যমুনা সার কারখানার দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১হাজার ৭০০ মে.টন। গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় পরে তা ১হাজার ৩০০ মে.টনে নেমে আসে। গত জুলাই মাসে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়। প্রয়োজন মাফিক গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় ২১ জুলাই যমুনার সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে কারখানা সংশ্লিষ্ট হাজারো শ্রমিক-কর্মচারী কর্মহীন হয়ে পড়ে। আমদানি নির্ভর হয়ে পড়ে যমুনা। যমুনার উৎপাদিত সার গুনগত মানের দিক থেকে অন্য যেকোন সারের চেয়ে উত্তম। তবুও যমুনার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ায় আমদানি করা সারেই চলে চাষাবাদ। এতে আশানুরূপ ফসল উৎপাদন না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েন যমুনার কমান্ড এরিয়ার সকল কৃষক। শুধু তা-ই নয়। কর্মহীন হয়ে পড়া যমুনার শ্রমিক-কর্মচারিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। যমুনার উৎপাদন শুরু হওয়া নিয়ে নানা তাদের মনে নানা সংকা দানা বাধতে থাকে। এ কারণে যমুনাকে বাঁচাতে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে নানা কর্মসূচি দিতে শুরু করে তারা।
যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহের দাবিতে কারখানার প্রধান ফটক অবরোধ করে দফায়-দফায় মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন শুরু করে শ্রমিক-কর্মচারীরা। যমুনা সারকারখানার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএস) উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। রেশনিং পদ্ধতিতে হলেও গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে সারকারখানা চালুর জোর দাবি জানান তারা।
এদিকে দীর্ঘ ৬ মাস উৎপাদন বন্ধ থাকায় যমুনা সার কারখানার বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ বিনষ্ট হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। সম্প্রতি যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ দেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে উৎপাদন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেক্টরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় কারখানা কর্তৃপক্ষ। একপর্যায়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে যমুনার উৎপাদন শুরু হয়।
এ ব্যাপারে যমুনা সার কারখানার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গ্যাস সংকটে যমুনার সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ে। গ্যাস সরবরাহের দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা দফায়-দফায় নানা কর্মসূচি পালন করে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কারখানার বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ বিনষ্ট হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যমুনার উৎপাদন শুরু হওয়ায় কারখানা সংশ্লিষ্ট সকলের মুখে হাসি ফুটে উঠে। সার উৎপাদনের নানা সংকা কেটে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে যমুনা সারকারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শহীদুল্লাহ খান মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানান।