জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়ামারী ও রৌমারী উপজেলার লাঠিয়াল ডাঙ্গা সড়কের জিনজিরাম নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ ১০ গ্রামের ১৫হাজারেরও অধিক মানুষ। উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা নেওয়ায় গুণতে হচ্ছে বাড়তি খরচ কৃষকদের। দীর্ঘ দিনে এ অবস্থা চললেও দেখার যেনো কেউ নেই। দুর্ভোগ কমাতে ওই জায়গায় একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
সোমবার সকালে সরে জমিনে দেখা গেছে,চর রাজিবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়ামারী ও রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের লাঠিয়াল ডাঙ্গা সড়কের বালিয়ামারী নামক এলাকায় জিনজিরাম নদীর উপর একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। সাঁকোটির অবস্থা নড়বড়ে। প্রায় ১০০মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিশু শিক্ষার্থীরা। উৎপাদিত কৃষিপণ্য মাথায় করে পার হচ্ছেন অনেকেই।
বালিয়ামারী নয়া পাড়া গ্রামের চান মিয়া বলেন, আমি ঘাটটি ডেকে নিয়েছি। বর্ষা মৌসুমে খেওয়া নৌকা চালিয়ে মানুষকে পারাপার করি। আর শুশকো মৌসুমে এই বাঁশের ব্রিজটি নির্মাণ করে দিয়েছি। দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে মানুষ খুব কষ্টে এ পথে যাতায়াত করছেন। মানুষের দু:খের যেনো শেষ নেই। এ বাঁশের সাঁকোতে বকবান্ধা, খেওয়ার চর, আলগার চর,লাঠিয়াল ডাঙ্গা, বংশী ভিটা,বাগান বাড়ি, বালিয়ামারী বাজার পাড়া ,ব্যাপারী পাড়া,পশ্চিম পাড়া,মন্ডল পাড়া, নয়াপাড়া, শিবেরডাঙ্গী ও চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা গ্রামের হাজারও মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে থাকেন।
ডেকোরেটর ব্যবসায়ী বশির আলম বলেন, বাঁশের এ ব্রিজটি দিয়ে এ অঞ্চলের বয়স্ক মানুষ, স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নিরুপায় হয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। অনেক সময় সাঁকোর খুঁটি ও মাঁচা ভেঙে ঘটে দুর্ঘটনা।
সেতু নির্মাণ না হওয়ায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহণে অতিরিক্ত টাকা খরচ এবং ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার কৃষকরা বললেন বালিয়ামারী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান আকুল। তাঁর ভাষ্য,ওই জায়গায় ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা গেলে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ দূর হবে।
ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে মটরসাইকেলে পার হচ্ছিলেন মমিনুল ইসলাম মিন্টু। তিনি বলেন, এই সাঁকোতে উঠলেই মনে হয় যেনো জীবন শেষ। আতঙ্ক নিয়ে পারাপার হতে হয়।
ওই সাঁকো দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন বাগান বাড়ি গ্রামের ল্যাদ ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন। তিনি বলেন, এখানে ব্রিজ না থাকায় সারা বছর মানুষ দুর্ভোগে পোহান। বন্যার সময় বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে গিয়ে আরও দুর্ভোগ বেড়ে যায়। তখন নৌকা ও ভেলা দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পরে মহা বিপাকে।
বালিয়ামারী বিজিবি ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা জানান, যেহেতু এটি সীমান্ত এলাকা,সে জন্য জরুরী ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় ডিইটিতে যেতে হয়। কিন্তু ব্রীজ না থাকায় আমরা সময়মত স্পটে পৌছতে পারি না। সে জন্য অতিশ্রীঘ্রই ব্রীজটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
রাজিবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিরন মো: ইলিয়াস জানান, এলাকার মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ব্রিজটির আশু প্রয়োজন।
চর রাজিবপুর উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ব্রিজের তালিকা দেওয়া আছে। যে কোন মুহুর্তে পাস হয়ে আসবে।