বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সরকারিভাবে ইজারা নেয়া বালু মহালের স্থান দূরে হওয়ায় ইজারা ছাড়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে ব্যবসায়িরা। ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং চরের উর্বর আবাদি জমিজমা হুমকির মুখে পড়েছে। মাস দুয়েক হলো এরকম কর্মকাণ্ড চললেও বার বার উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাঁচ্ছেন না। কেবল ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মিললেও প্রকৃত পক্ষে সরজমিনে দৃশ্যমান কোন কিছুই না থাকায় হতাশায় পরেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, সরকারিভাবে সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার ইজারা দেয়া বালু মহালগুলো হলো, সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্ণিবাড়ি ইউনিয়নের নারাপালা ও একই উপজেলার বোহাইল ইউনিয়নের কালিয়ান বালুমহাল। এছাড়াও ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি বালু মহাল রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারিভাবে ইজার দেয়া বালু মহালগুলো দূরে হওয়ায় ইজারাদারেরা অন্য জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। তারা ইজারা নেওয়ার জায়গার পরিবর্তে সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্ণিবাড়ি, চরকুমারপাড়া, দেবডাঙ্গা, কুতুবপুর ইউনিয়ন, ধলিকান্দি, চন্দনবাইশা ইউনিয়ন, রৌহদহ, আদবাড়িয়া, চর চন্দনবাইশা, দেলুয়াবাড়ি, গজারিয়া বালুর পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করছেন। বৈধ বালু উত্তোলনের অন্তরালে অবৈধ বালু উত্তোলনের পর যমুনা পাড়ে বালুর পাহাড় গড়ছেন বালু ব্যবসায়ীরা। বগুড়া জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: রাশেদুজ্জামান রাসেল। তিনি উপজেলার গোহাইল ইউনিয়নের কালিয়ান বালু মহাল ইজারা নিয়েছেন।
অপরদিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্ণিবাড়ি ইউনিয়নের নারাপালা বালু মহাল ইজারা নিয়েছেন সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সারিয়াকান্দি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আইয়ুব আলী তরফদার এবং স্থানীয় আ.লীগ নেতা আবদুস সালাম। অথচ তারা বালু উত্তোলন করছেন যমুনা নদীর উল্লিখিত স্থান থেকে। এছাড়াও উপজেলার বাঙালী নদীর, জোড়াগাছা, সাইহাটা, চরড়োমকান্দি, মাছিরপাড়া, হিন্দুকান্দি, চর গোসাইবাড়ি, কুপতলা, নারছি ইউনিয়নের চর হরিনা, চর গোদাগাড়ি ও গনক পাড়া সহ কমপক্ষে শতাধিক স্থান থেকে স্থানীয় বালু দস্যুরা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে রমরমা বালুর ব্যবসা করছেন।
ইজারা নেয়া বালু মহাল ছাড়া অন্য বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলনের প্রশ্নের জবাবে, বগুড়া জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: রাশেদুজ্জামান রাসেল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’
সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সারিয়াকান্দি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আইয়ুব আলী তরফদার জানান, ‘আমি ইজারা নেয়া জায়গা থেকেই বালু তুলছি, কামালপুরের চেয়ারম্যান ভিন্ন জায়গা থেকে বালু তুলছেন। আমি যমুনা নদীর স্থান থেকে বালু তুলছি সেগুলো আমার ফুফাদের জায়গা জমি। ফুফাদের সাথে কথা বলেই বালু তুলছি। আর কার অনুমতি লাগবে?’
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রেজাউল করিম বলেন, ‘অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে শীঘ্রই সরেজমিনে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।