ঋতু বৈচিত্র্যের এ বাংলায় বছরের বিভিন্ন সময় বর্ণিল রং আর অনাবিল সৌন্দর্য নিয়ে সেজে ওঠে ফসলের মাঠ। কখনো সবুজ রঙে ছেয়ে যায় মাঠ, কখনো রুপালি জলে ভরে যায় বিল। আবার কখনো সোনালি ধানের শিষে লাগে বাতাসের দোল, আর শীতের শুরুতে বরেন্দ্রের বিস্তর মাঠ জুড়ে দেখা যায় হলুদ সরিষা ফুল। দেখে মনে হয় যেন প্রকৃতি সেজেছে হলুদের সাজে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের হরিপুর, বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গুজিশহর, বরিয়া, ছাতমা এলাকায় সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ। দেখে মনে হয়ে যেন হলুদ চাদরের বিছানা। এ সময় ছোট থেকে শুরু করে বয়স্কদেরও দেখা যায় সরিষা মাঠের ছবি তুলতে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৫০ হেক্টর মেট্টিক টন। মৌসুমে সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
চকশিতা গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমাদের হরিপুর বিলে পানি থাকার কারণে ধানের ফসল একবার হয়। বিলের পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সরিষার আবাদ শুরু করি। এবার ১০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
একই গ্রামের সরিষা চাষি লবির বলেন, ‘এ বছরে ৮ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে এবং ফুলও এসেছে ভালো। প্রতি বছর বিঘা প্রতি ৪-৫ মণ করে পেলেও এ বছর ৬ মণের অধিক সরিষা ফরনের আশা করছি।’
গুজিশহর এলাকার কৃষক রমজান বলেন, ‘বোরো ধান লাগানোর আগে খেতে সরিষা লাগানো হয়। সরিষার দাম ভালো থাকায় এ বছর ১০ বিঘা সরিষা আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, ‘এ মৌসুমে সরিষা চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। পরিবেশ ভালো থাকায় ফলন নিয়ে কৃষকও বেশ আশাবাদী। দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তিনি জানান, এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে অতিরিক্ত উৎপাদন হবে বলেন তিনি।