শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের ভারত সীমান্তঘেঁষা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত খলচান্দা গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত খরস্রােতা চেল্লাখালী নদীর জিরো পয়েন্টে নদী তীর ভেঙ্গে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে তীরবর্তী কোচ পল্লীর বাড়িঘর দিনদিন হুমকীর মুখে পড়ছে। এ ছাড়া ওই কোচপল্লীতে যাওয়ার রাস্তাটি বালুভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একই সাথে চেল্লাখালী নদীর উপড় নির্মিত বুরুঙ্গা ব্রীজের উত্তর দক্ষিন পাশে ব্রীজের ১কিঃ মিঃ এর মধ্যে বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করায় বালু মাটি তুলে নেওয়ায় নদীর তীর, নদী ও ব্রীজ হুমকির মুখে পড়েছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বারমারী এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোচপাড়া খলচান্দা গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পাহাড়ি কন্যা চেল্লাখালী নদী। এই নদীর লাল বালু শেরপুর জেলা প্রশাসন থেকে প্রতি বাংলা সনের জন্য ইজারা দেয়া হয়। ইজারায় জিরো পয়েন্ট এলাকা ও নদীতীর ভেঙ্গে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছেন না ওই এলাকার বালু ব্যবসায়ীরা। খলচান্দা গ্রামের পচিশন কোচ ও সুকুমার কোচের বাড়ির পাশে জিরো পয়েন্টে কমপক্ষে ১০টি মিনি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এখানে কোন প্রকার বাধা বিঘ্ন ছাড়াই বালু উত্তোলন করছে এলাকার ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া নদীর উপর নির্মিত বুরুঙ্গা ব্রীজের উত্তর ও দিক্ষন দিকে রয়েছে ১০/১২টি ড্রেজার মেশিন। ওই এলাকায় অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীর ভেঙ্গে নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। একইসাথে হুমকীর মুখে পড়ছে বারমারী বাজার এলাকা ও খলচান্দা গ্রামের বসতবাড়ি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিভৃত কোচপল্লী যাওয়ার রাস্তাটিও বর্ষাকালে পানি জমে আর শুষ্ক মৌসুমে বালুর কারণে যাতায়াতে অযোগ্য হয়ে পড়ে এই রাস্তা। এছাড়াও চেল্লাখালী নদীর বুরুঙ্গা ব্রীজের সাথে উত্তর পাশে নদী তীর ঘেষে এবং দক্ষিনেও একই অবস্থায় শুরু করেছে বালু উত্তোনের কাজ। ধীরে ধীরে এসব বালু উত্তোলনে ফলে নদীর আর নেই। নদীর তীর ধ্বংস করে বালু উত্তোলন করায় প্রতি বছরই নদী তীর ভেঙ্গে নদী ভাংগনের মুখে পড়ে সর্ব শান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসাী। এমনবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসলেও দেখার যেন কেউ নেই।
ওই গ্রামের রমেশ কোচ, বিরতি কোচনী, মায়া দেবী কোচনী ও জুলফিকার আলী ভুট্রোসহ অনেকেই জানান, এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে দিনদিন নদীতীর ভেঙ্গে তাদের বাড়ির কাছে চলে আসছে। এমন বালু উত্তোলন বন্ধ না করা হলে বসতবাড়ি নদীতে চলে যেতে পারে। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই হচ্ছে বেশী। এ ছাড়া খলচান্দা গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা দিয়ে সারা বছর বালু ভর্তি ট্রাক চলাচল করায় ওই রাস্তার বেহাল অবস্থা হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে কাঁদাপানি আর শুষ্ক মৌসুমে বালুর স্তুপে চলাচলে দারুণ সমস্যা হচ্ছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে এর প্রতিকারের দাবি জানান গ্রামবাসী।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, জিরো পয়েন্টে নদীতীর ভেঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা বেআইনী। খুব দ্রুতই সরেজমিনে পরিদর্শন করে দায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।