পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের দাপটে কাহিল হয়ে পড়েছে উত্তরের এ জনপদ। সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, নতুন বছরের শুরুত থেকেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে এসেছে। কদিন ধরে ঘন কুয়াশা। কনকনে শীতে কাহিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত নেমে আসে। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত শীত অনুভূত হয়। দিনেও আগের মতো গরম নেই। বিকেল গড়ালেই ঠাণ্ডা লাগতে শুরু করে।
হাড়কাঁপানো শীত পড়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। ভোর ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকেই। তবে পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। চা-শ্রমিক বাদল, বাবু ও হায়াত জানান, কয়েকদিন ধরে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে চা-বাগানের পাতা তুলতে গিয়ে হাত-পাতা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ করতে হচ্ছে।
পাথর শ্রমিক জমিরন, তাসলিমা ও রমিনাসহ কয়েকজন নারী শ্রমজীবী নারী জানান, আমরা আজানের পর পরই ঘুম থেকে উঠি। কদিন ধরে খুব ঠাণ্ডা। ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র সব বরফের মতো লাগে এবং হাতপা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ শেষ করে পেটের দায়ে পাথরের কাজে যেতে হচ্ছে।
এদিকে, দিন-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, সোমবার সকাল ৯টায় জেলায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে, যা সারাদেশের সর্বনিম্ন। ভোর ৬টায় ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এ তাপমাত্রায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। গতকাল রোববার রেকর্ড হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তর-পূর্বকোণ থেকে ৩ নটিক্যাল গতিতে বয়ে যাওয়া হিমেল বাতাসের কারণে ঠাণ্ডা অনুভব হচ্ছে।