দেশে বার্ষিক চাহিদার তুলনায় কম উৎপাদিত হয় পেঁয়াজ। সংরক্ষণের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবেও নষ্ট হয় অনেক পেঁয়াজ। এই ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। রবি মৌসুমে অন্যান্য ফসল বাদ দিয়ে পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধি সম্ভব নয়, তাই সরকার গ্রীষ্মকালীন অর্থাৎ খরিপ মৌসুমে পেঁয়াজ আবাদের কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি করে আমদানি নির্ভরতা কমাতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় উৎপাদিত গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আকার, স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিমান অনেক উন্নত। কৃষিপ্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে উপজেলায় ২৩০ জন কৃষককে ১ কেজি করে এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ, ডেপ, পটাশ সারসহ পলিথিন ও অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। এই পেঁয়াজ চাষে ঘুরছে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা। পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে চলেছেন চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নশরতপুর গ্রামের জগদিশ মেম্বারপাড়ার কৃষক গণেশ চন্দ্র রায়। তিনি কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির নতুন উদ্ভাবিত এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। তিনি মাত্র ১০ শতক জমিতে এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তার ক্ষেতে উৎপাদিত প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম। তিনি এ জমি থেকে ১০-১৫ হাজার টাকার পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা পোষণ করছেন। তাঁর জমিতে উৎপাদিত পেঁয়াজ দেখে অন্যান্য চাষিরাও এ জাতের পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
নশরতপুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খাদেমুল ইসলাম জানান, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বাজারে যখন শীতকালীন পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে, সে সময় এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ মানুষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আরো বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসে বীজবপণ করে ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা রোপন করতে হয়। ৯০ দিনের মধ্যেই এ পেঁয়াজ সংগ্রহ করা সম্ভব। প্রথম পর্যায়ে রোপণকৃত পেঁয়াজ ইতোমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। গাছসহ এ পেঁয়াজ বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা শারমিন বলেন, এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।