বিএনপি জনজীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। কাজেই ভবিষ্যতে তাদের আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিএনপি সমাবেশের কথা বলে কী করে তা নিয়ে আমাদের আবার ভাবতে হবে। মঙ্গলবার দুপুরে তথ্য অধিদপ্তর সম্মেলন কক্ষে বর্ষীয়ান রাজনীতিক মোনায়েম সরকার সম্পাদিত আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোনায়োম সরকারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলা টিভির চেয়ারম্যান আবদুস ছামাদ, যুক্তরাষ্ট্রের শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর সুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, প্রকাশক ওসমান গনিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। গত সোমবার চট্টগ্রামে বিএনপির সভাবেশে গাড়ি ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ দেওয়া হয়েছে এ বিষয়টি সরকার কিভাবে দেখছে জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা সবসময় বলে আসছি, দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতেই বিএনপি সভা-সমাবেশ করছে। অতীতের সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের পথ থেকে তারা বের হয়নি। সেটি তারা চট্টগ্রামে দেখিয়েছে। আর এদিকে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চায়। তিনি বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নমুনা হচ্ছে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িঘোড়া ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। আর এটিকেই শান্তিপূর্ণ বলেন তারা। কিন্তু অশান্তি সৃষ্টি করতেই তারা এই সমাবেশগুলো করছেন। যেহেতু সমাবেশের নামে তারা আবারও অগ্নিসংযোগ শুরু করেছে। পুলিশের ওপর হামলা করছে। জনজীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। কাজেই ভবিষ্যতে তাদের আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমি সেটিই মনে করি। বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, সরকার প্রশাসন দিয়ে দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার কোনো দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে না। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা কি করেছিলো সেটি দেখতে পেছন ফিরে তাকানোর জন্য। বিএনপি ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিন হার্ট নামে যেভাবে ডজন ডজন মানুষ হত্যা করেছিল, আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ের অফিস সিল করে দিয়েছিল, মালামাল লুট করে নিয়েছিলো। তাদের কোনো অফিস সরকার বন্ধ করেনি। তারা আমাদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যখন সমাবেশ করতে চাইতাম তখন আমাদের ওপর বোমা, গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তখন ২৪ জন মানুষকে হত্যা করেছে, ৫০০ অধিক মানুষ আহত হয়েছে। পাশাপাশি শেখ হেলালের জনসভায় হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, কিবরিয়া সাহেবের জনসভায় হামলা চালিয়েছে। এ রকম আরও বহু জনসভায় হামলা চালিয়ে আমাদের জননেতাদের হত্যা করেছে। মন্ত্রী বলেন, বিএনপির কোনো জনসভায় একটি পটকাও কি ফুটেছে? কোথাও একটি পটকাও ফুটেনি, তাদের নেতাকর্মীদের গায়ে একটি আঁচড়ও লাগেনি। আমরা যখন আমাদের দলীয় কার্যালয়ে মিটিং করতে চাইতাম দুই পাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বের হতে দিতো না। রাসেল স্কয়ারে ধর্মঘট বা হরতালে বসতাম তখন আমাদের ওপর লাঠি পেটা করা হতো। মতিয়া চৌধুরীকে টানাহেঁচড়া করেছে পুলিশ। মোহাম্মদ নাসিমকে লাঠি পেটা করেছে। আমাদের বহু এমপি মন্ত্রীকে লাঠিপেটা করেছে। অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের গায়ে কি একটা আঁচড় লেগেছে। কোনো কিছুই লাগেনি। আমরা বিএনপির ওপর কোনো দমন নিপীড়ন চালাচ্ছি না বরং তারাই যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের ওপর অমানুষিক অমানবিক দমন নিপীড়ন চালিয়েছে।