বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেছেন, জাঁতি আজ সংকটে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোটা জাঁতি জেগে উঠেছে। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ আমরা সেই লড়াই সংগ্রামে জয়ী হবো। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের নেতা জিয়াউর রহমান। যিনি জাতির ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি ও বহুদলীয় গগণতন্ত্রের প্রবক্তা। আমরা তাকে শ্রদ্ধা জানাই। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা মানুষ। তিনি যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরে ৭ নভেম্বরও তিনি জাতির ক্রান্তিলগ্নে হাল ধরেছিলেন। হতাশাগ্রস্ত জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ নতুনভাবে উজ্জীবিত হয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। তিনি একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন। মুক্তবাজার অর্থনীতি উপহার দিয়েছেন। আজ আধুনিক বাংলাদেশের উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে দেশকে উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, তাকে আমরা বেশিদিন পাইনি। বাংলাদেশের শত্রুদের হাতে তিনি শহীদ হয়েছেন। বর্তমানেও আমরা তার আদর্শ ও ১৯ দফাকে সামনে রেখে আমরা পথ চলছি। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির মো. আবদুস সালাম, ঢাকা উত্তরের আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুইয়া, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বইমেলায় ভিন্নমতের বই প্রকাশকারী স্টল স্থগিতের প্রতিবাদ: বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলা একাডেমি আয়োজিত আসন্ন একুশের বইমেলায় ভিন্নমতের বই প্রকাশের জন্য আদর্শ প্রকাশনীর স্টল স্থগিত করায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমীর একুশের বইমেলা মুক্তবুদ্ধি চর্চার উপযুক্ত স্থান হিসেবে যুগ যুগ ধরে বিবেচিত হয়ে আসছে। সরকারবিরোধী ও ভিন্নমতের বই প্রকাশের অভিযোগে আদর্শ প্রকাশনীকে আসন্ন বইমেলায় স্টল স্থগিত করা খুবই উদ্বেগজনক এবং নিন্দনীয়। এ ঘটনা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, বইমেলা কোনো সরকার বা একক দলের নয়। বরং দল-মত-নির্বিশেষে সবার প্রাণের মেলা হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছিল। কিন্তু তিনটি ভিন্ন মতের বইয়ের জন্য ছয় শতাধিক বই প্রকাশকারী সংস্থা আদর্শ প্রকাশনীর স্টল স্থগিত করার মাধ্যমে বাংলা একাডেমি ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হলো এবং ভিন্নমত দমন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করতে অপব্যবহার করছে। অথচ ভিন্নমতের কারনেই বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এর আগেও কয়েক বার বাংলা একাডেমি একুশের বইমেলায় ভিন্নমতের বই প্রকাশের কারণে প্রকাশনা সংস্থার স্টল স্থগিত বা বাতিল করেছে। গণবিরোধী আওয়ামী সরকার গণতন্ত্র হরণ করে কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন দির্ঘায়িত করতে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নগ্ন দলীয়করণ ও দখল করে দেশকে ভঙ্গুর করে দিয়েছে। জনগণের অর্থে পরিচালিত বাংলা একাডেমীর মত সৃজনশীল এবং মেধা ও মননের প্রতিষ্ঠানকেও এরা ঘৃণ্য দলীয়করণ করেছে। তিনি বলেন, আমি বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে একুশের বইমেলাকে দলীয়করণ না করার আহ্বান জানাই এবং আসন্ন বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীসহ ভিন্নমতের বই প্রকাশকারী অন্যান্য প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে তাদের স্টল বরাদ্দের আহ্বান জানাই।