মাঘের কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে কাহারোল উপজেলায় কৃষকেরা বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গতকাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাঠে মাঠে দেখা গেছে কৃষকেরা কেউ বা জমিতে পানি দিচ্ছেন, কেউবা হাল চাষ করছেন আবার কোনো কৃষক জমিতে কোদাল নিয়ে জমির আইল বাধছেন। যারা মাঠে সোনা ফলাবে তাদের স্থবিরতা নেই। কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমি তার মধ্যে হাইব্রিড রয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমি। যা থেকে ২৩ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হবে বলে ধারনা করছেন কৃষি অফিস। গত বছর লক্ষ মাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমি।
চাল উৎপাদন হয়েছিল ২৩হাজার ৬১ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর বোরো ধানের আবাদ লক্ষ মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ ধারনা করছেন। হাড় কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাকডাকা ভরে উঠে কাদা মাঠে নেবে পরেছেন গ্রাম বাংলার কৃষকেরা। শীত যেন সবসময় তাদের কাছেই যেন হার মানে। গতকাল উপজেলার বলেয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে ভোর বেলায় প্রচন্ড শীত ও কুয়াশার মধ্যেও কৃষকেরা দল বেধে মাঠে বোরো ধানের চারা লাগাচ্ছেন। কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, শীতের ভয়ে বসে থাকলে চলবে কী করে। আমরা এ সময় বসে থাকলে আমাদের পরিবার ও দেশের মানুষের পেতে ভাত জুটবে কিভাবে। অন্য এক কৃষক আসলাম বলেন, আমরা বসে থাকলে সমস্য শুধু আমদের হবে না, গোটা দেশে সমস্যা হবে। মাঠের পর মাঠ ফসল না লাগালে মানুষ খাবে কি। বুধবার সকাল ১০টায় উপজেলার বলেয়া গ্রামের এলাকার দুইজন কৃষক মাঠের উদ্দ্যেশে ধানের চারা নিয়ে জমিতে যাচ্ছিলেন। তারা বলেন মনে হচ্ছে ঠান্ডার কারণে জমির পানি হিমেল হয়ে থাকে ধানের চারা লাগাতে কষ্ট হয়। কৃষক আবদুল মান্নান বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন না হলে কদিন পরেই মাঠের পর মাঠ হয়ে যাবে সবুজ ধান ক্ষেত। আর তারপরই সোনার ফসলে শুরু হবে হাসির ঝিলিক।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, বোরো আবাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সুষম সার ব্যবহার, প্যাচিং পদ্ধতি ও লাইন করে ধান লাগালে বোরো ধানের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। তিনি আরো বলেন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।