রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ- সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. ইলিয়াছ আহমেদ আর নেই। রোববার (২৯ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৩ টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। (ইন্না লিলাহি... রাজিউন) মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে সহ অসংখ গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। সাহসী এই প্রবীন রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুতে রংপুরের সর্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় এ্যাড. বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহমেদের প্রথম জানাজার নামাজ রংপুর কোট চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১২টায় দ্বিতীয় জানাজার নামাজ রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা ২টায় বাদ জোহর শালবন মিস্ত্রিপাড়া ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় তার সর্বশেষ জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে শালবন মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থানে মরহুমের দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়। জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাবিরুল ইসলাম, রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফেরদৌস আলী চৌধুরী, রংপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছদরুল আলম দুলু, রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফিরুজুল ইসলাম, কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত হোসেন আলী, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মততাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. রোজাউল করিম রাজু, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডাঃ দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আবুল কাশেম, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাবেক সাধারণ সম্পদক তুষার কান্তি মন্ডল, রংপুর জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, রংপুর মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন, রংপুর চেম্বার অব কমার্স এ- ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোস্তফা সোহবার চৌধুরী টিটু, রংপুর মেট্রাপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ- ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রোজাউর ইসলাম মিলন, রংপুর জেলা বেকারী মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল হক মুন্না, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কায়সার রাশেদ খান শরীফ, শামীম তালুকদার, নবী উল্লাহ পান্না, সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাসদ রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি গৌতম রায়, সাধারন সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সহ এলাকার মুসল্লীগন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ আহমেদ ১৯৬৭ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। পরবর্তীতে ১৯৭০ এর উত্তাল সময়ে তিনি রংপুর কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন। তিনি রংপুর মহুকুমা ছাত্রলীগের নেতা থাকা অবস্থায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। স্বাধীনতার পরে শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে যুবলীগ গঠন হলে তিনি রংপুর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তীতে বিভিন্ন মামলায় নির্যাতনের শিকার হন। ওই সময়ে তিনি যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুব সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে এসে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করার কিছুদিন পর ১৯৮৪ সালে দল ভাঙনের কবলে পরলে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রায় দুই দশক সংগঠককে আগলে রাখেন। ২০১১ সালের পর তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পরবর্তীতে সিনিয়র সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন।