ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের জলমহাল এলাকায় রোববার ভোরে ঘন কুঁয়াশার মধ্যে যাত্রী বোঝাই দু’টি ষ্পীট বোটের মুখোমুখী সংঘর্ষে একজন নিহত এবং আরও তিনজন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহত ষ্পীডবোট যাত্রী হলেন-ফরিদপুর সদর উপজেলার গুহ লক্ষীপুর এলাকার শিশির হালদারের ছেলে সুকুমার হালদার (৬০)। আহতরা হলো-উপজেলা সদরের গ্রামীন ব্যাংক শাখা ম্যানেজার তানজিলুর রহমান (৫৫) মধ্য বিএস ডাঙ্গী গ্রামের ববি আক্তার (৩৫) ও বিএস ডাঙ্গী গ্রামের মতিয়ার রহমান (৫০)। আহতরা রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটের ষ্পীডবোট গুলো চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্তাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। আর পদ্মা নদীর অপর পারের চর মৈনট ঘাটের ষ্পীডবোট গুলো দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়ন্ত্রন করেন। গত শনিবার থেকে দোহার উপজেলার নুরুল্লাপুর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী শাহলাল ফকির বাড়ীর মেলা চলছিল। এ মেলায় যাতয়াতের জন্য আশপাশের ক’য়েক উপজেলার লাখো জনতা রাতভর পদ্মা নদী পারাপার হয়ে আসছিল।
ঘটনার দিন ভোরে, ঘন কুঁয়াশার মধ্যে মোঃ আলমগীর হোসেন মালিকানাধীন একটি ষ্পীডবোট যাত্রী বোঝাই করে চর মৈনট ঘাট থেকে উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ষ্পীডবোটটি চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর চরঝাউকান্দা ইউনিয়ন জলমহাল এলাকায় পৌছলে গোপালপুর ঘাট ঘুরে ফিরে আসা বিপরীতমুখী আরেকটি দ্রুতগামী ষ্পীডবোটের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে ষ্পীডবোট উল্টে যাত্রীরা পদ্মা নদীতে পড়ে যায়। এ সময় পিছন দিক থেকে চলমান অন্যান্য যাত্রী বোঝাই ষ্পীডবোটগুলো ছুটে গিয়ে পানিতে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করেন। এ ষ্পীডবোট দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয় এবং আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা যায়। এ ষ্পীডবোট দুর্ঘটনায় দোহার থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং নিহতের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যপারে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, “ষ্পীডবোট দুর্ঘটনা ঘটেছে পদ্মা নদীর অপর পারের চর মৈনট ঘাট এলাকায়। ওই ঘাটটি দোহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিয়ন্ত্রন করেন”।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দু’দিন ধরে পদ্মা নদীর গোপালপুর ও মৈনট ঘাট দিয়ে চরম ঝুকি নিয়ে ঘন কুঁয়াশার মধ্যে দিয়ে মেলার যাত্রীরা প্রায় সারারাত পদ্মা নদী পারাপার হচ্ছেন। লাইট পোষ্ট বিহীন অরক্ষিত এ নৌপথের যাত্রীরা লাইফ জেকেট ছাড়াই গভীর অন্ধাকার ও ঘন কুঁয়াশার মধ্যে জীবনের ঝুকি নিয়ে পরাপার হচ্ছে পদ্মা নদী। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।