আসন্ন পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে চলছে নানামূখী বিশ্লে-ষন। কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের দলীও মনোনয়ন তা নিয়েও চলছে অনেক জল্পনা-কল্পনা। মাস্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার এর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনের তফসিল এর মধ্যেই ঘোষণা করেছে উপজেলা নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৬ মার্চ এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের ০১ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের দুবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বর্ষীয়ান আ.লীগ নেতা মাস্টার অমূল্য রঞ্জন হালদারের মৃত্যু হলে ওই পদটি শূন্য হয়ে যায়। শূন্য হওয়ার পর থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কে হচ্ছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা ফেসবুকে তৎপরতা শুরু করেছেন। এ ছাড়া পোস্টারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েকজন প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। নৌকার মাঝি হতে নানা ধরনের তৎপরতা শুরু করেছেন তারা। বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ভোটারদের আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছেও প্রকাশ করছেন। গত ২৩ জানুয়ারী বিকেল ৫টায় নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার একটি আদেশ উপজেলা নির্বাচন অফিসে আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী চেষ্টা-তদবিরে নেমে পড়েছেন। তারা অধিকাংশই নিজের প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি থেকে কোন প্রার্থী না থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ডজন খানেক মনোনয়ন প্রাত্যাশীর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা জুড়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা- কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন। অন্যদিকে প্রার্থীরা নিজের পক্ষে মনোনয়ন নিশ্চিত করতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। কেন্দ্রীয় লবিং-তদবিরে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তারা। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন খান, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ মোস্তফিজুর রহমান রঞ্জু, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইচ চেয়ারম্যান শাহ্রিয়ার ফেরদৌস রুনা, ডাঃ দীপঙ্ককর নাগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক উপজেলা কমান্ডার শেখ আবদুল লতিফ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট দিপ্তীষ চন্দ্র হালদার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনীক সম্পাদক সুজিত কুমার সিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নির্জন কান্তি বিশ^াস, উপজেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়াম্যান মাস্টার অমূল্য রঞ্জন হালদারের বড় ছেলে কামনাশীষ হালদার রতন মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আসতে পারেন নাজিরপুর উপজেলার বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ঢাকাস্থ জাতীয়তাবাদী ফোরামের পিরোজপুর জেলা সভাপতি হিরুয়ার রহমান মোল্লা। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন খান বলেন, আমি নির্বাচ করতে আগ্রহী তাই দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবো। উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম হাওলাদার জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদে আমরা একবছরের জন্য দলীয় কোন প্রার্থী দেবনা জেলার সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এ, বি, এম সিদ্দিকুর রহমান জানান, তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন জমাদানের শেষ তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২০ ফেব্রুয়ারি, আপিল দাখিলের শেষ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ২৪ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি, প্রতীক বরাদ্দ ২৮ ফেব্রুয়ারি। ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নাজিরপুর উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯ হাজার ১৭৪ জন ও নারী ৭৫ হাজার ৯০৪ জন এবং ভোট গ্রহনের জন্য ৫৯টি কেন্দ্র রয়েছে। আর ইভিএমের মাধ্যমেই ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।