কচুয়ায় উপজেলার বাজার গুলোতে ফের বেড়েছে নিজ প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম। ফলে হিমশিম খেতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মাছ বাজার, কাঁচা বাজার, মশলাদির বাজারসহ যাবতীয় দ্রব্যমূল্যের আকাশছোঁয়া। প্রতিটি পণ্যের মূল্য ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে খেটে খাওয়াা নিম্ন আয়ের ও মধ্যবিত্ত মানুষকে।
উপজেলার বিভিন্ন কচুয়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে,সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি দোকানে মূল্য তালিকা বা চার্ট থাকার কথা থাকলে ও উপজেলার কোন দোকানে সঠিক ভাবে কোন দ্রব্যের মূল্য তালিকা বা চার্ট নেই, কোন কোন দোকানে দ্রব্যের মূল্য তালিকা বা চার্ট থাকলেও তা কয়েকদিন পূর্বের তালিকা। বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন-সয়াবিন তেল ১৯৫-২০০ টাকা, মসুরি ডাল ১১০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, রসুন ৭০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০-- ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ১০০০ টাকা,গ্যাস সিলিন্ডার ১৬৫০ থেকে ১৭০০ টাকা, পোলট্রি মুরগির মাংস ১৭০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা, ডিম ৪৪-৫৫ টাকা হালি, শুকনা মরিচ ৫০০ টাকা, মরিচ গুড়ো ৪৫০ টাকা, হলুদ গুড়া ২০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা ও রুই, কাতল মাছ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার শাহীন মোল্যা নামে এক ক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, 'কিছুদিন আগে পকেট করে টাকা আনতাম, ব্যাগ ভরে বাজার করতাম তাও পকেটে টাকা থাকত। বর্তমানে ব্যাগে করে টাকা এনেও এক ব্যাগ ভরা বাজার হচ্ছে না। এ যেন লাগামহীন পাগলা ঘোড়া। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়তে থাকলে আমরা কীভাবে জীবনধারণ করব।' এ ছাড়া প্রতিটি পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের পরিবারের মানুষ দিন দিন আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। বাজার করতে আসা ভ্যান চালক সবুজ শেখ বলেন, “কিছুদিন আগে ফার্মের মুরগি বা পোল্ট্রি মুরগির মাংশ কিনেছি ১৫০ টাকা ছিল। সেই মাংশ এখন ১৭০ টাকা ২৫০ টাকা কেজি। যে মাছ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় কিনেছি, সেই মাছ বর্তমানে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। যে গ্যাস সিলিন্ডার ১২৫০ থেকে ১৩০০ টাকায় কিনেছি তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫০ থেকে ১৭০০ টাকা, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে বাচ্চাদের মাছ-মাংস খাওয়াতে পারব না। কোনো রকম ডাল-শাক দিয়েই চালিয়ে নিচ্ছি।'
কচুয়া এলাকার দিনমজুর আদু শেখ জানান, 'আমার পরিবারে ৪ জন সদস্য, আমি সারাদিন দিনমজুর খেটে সংসার চালাই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করি। পানি বাদে সবকিছু কিনতে হয়। ৩ কেজি চাল কেনার পর অল্প কিছু টাকা থাকে, সেই টাকা দিয়ে বাজার হয় না। কোনো রকম টালমাটাল করে সংসার চালাতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে সামনের দিনগুলোতে সংসার কীভাবে চলবে জানি না'। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা; তাছমিনা খাতুন বলেন,আমি কয়েক বার বাজার মনিটারিং করেছি এবং সকল দোকান্দারদের সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি দোকানে মূল্য তালিকা বা চার্ট টাঙ্গিয়ে মূল্য তালিকা অণুযায়ী দোকানের মালামাল বিক্রি করতে বলেছি, আবার কোন কোন বাজার মনিটারিং করে, দোকানে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেই দোকানের মূল্য তালিকা বা চার্ট টাঙ্গিয়ে সেই তালিকা বা চার্ট অনুযায়ী বিক্রির কথা বলেছি। এরপরও যদি বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যে কোন অসঙ্গতী পাওয়া যায় তাহলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।