অনিয়ম, দুর্নীতি, অপচিকিৎসা ও অনুমোদনহীন ভাবে হাসপাতাল পরিচালনার দায়ে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট রোকেয়া স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে একটি হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ভুয়া চিকিৎসক কর্তৃক অপচিকিৎসা প্রদানের বিষয়ে নাঙ্গলকোট পৌর এলাকার হরিপুর গ্রামের খাদিজা বেগম নামে এক ভূক্তভোগীর স্বামী বাবুল হোসেন বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান মেহেবুবের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি তদন্তের দায়িত্বদেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশ্রাফুল হককে। অভিযোগের পর ওই হাসপাতালের নানাহ দুর্নীতি নিয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বুধবার সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশ্রাফুল হক সরেজমিনে ওই হাসপাতালে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় হাসপতালটি সিলগালা করে দেন।
উল্লেখ্য, নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন নাঙ্গলকোট-লাকসাম সড়কের পাশে রোকেয়া স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে একটি অনুমোদনহীন প্রাইভেট হাসপাতাল দীর্ঘদিন যাবৎ ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে অপচিকিৎসা ও বিভিন্ন রোগের অপারেশন করে আসছে। ফলে ভুয়া চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছে অনেক রোগী। গত ২ ফেব্রুয়ারী পৌর এলাকার হরিপুর গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী খাদিজা বেগম ওই অবৈধ হাসপাতালে চর্ম রোগের চিকিৎসার জন্য গেলে ভুয়া চিকিৎসক ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান পরিচয় দানকারী ইয়াছিন আরাফাত ৫’শ টাকা ভিজিট নিয়ে রোগীকে বিভিন্ন ওষুধ লিখে দেয়, পরে রোগী খাদিজা ওই ওষুধ গুলো সেবন করলে তার পুরো শরীরে ফোসকা পড়ে গিয়ে পচন ধরে। ভুয়া চিকিৎসক ইয়াছিন আরাফাতের ব্যবস্থাপত্রে দেখা যায় তার ডিগ্রি লিখা হয়েছে বিএসপিটি (ডিইউ), ডি অর্থোপেডিক্স মেডিসিন (সারিয়াক্স), পিজিটি স্পোর্টস মেডিসিন (বিকেএসপি), ড্রাই নিডেলিং (ইন্ডিয়া), সিকেটি (ইন্ডিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট ডিপার্টমেন্ট অফ পিএমআর ল্যাব এইড স্পেশালাইজড। ওই ভুয়া চিকিৎসক ও অবৈধ এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিয়ে অনেক রোগীর জীবন এখন সংকটাপন্ন। নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ দেব দাস দেব বলেন, এক ভ্ক্তূভোগীর অভিযোগের পর মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময়ে তারা কর্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শন টিম বুধবার সকালে অভিযুক্ত ওই হাসপাতালে গিয়ে সকল কার্যক্রম বন্ধ দেখতে পায়। এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান মেহেবুব ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশ্রাফুল হককে বার-বার ফোন দিয়েও না পেয়ে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।