রেলের বগিতে স্থাপতি বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিব ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘরে কানে হেডফোন দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ এর ভাষণ শ্রবণ করছেন ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আভিনা মুনজারিন আনহা (১১)। আর পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁরই সহপাঠী একই স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী সিরাজুন মুনিরা ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির আয়ান বিনতে ফিরোজ। আনহা পার্বতীপুর শহরের এ্যাফেক রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলে পড়ে সে। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুল ছুটির পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক জামিল আহম্মেদসহ ৫ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর সাথে এসেছেন পার্বতীপুর রেল স্টেশনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর রেল স্টেশনের দক্ষিণে ওয়াশফিট ইয়ার্ড প্লাটফর্মে রাখা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা বয়সী মানুষের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যন্ত সুন্দর ও পরিপাটি করে সাজানো বগিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত মুজিব শতবর্ষের লোগো, বঙ্গবন্ধুর জীবন- আন্দোলনের সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভিডিওর মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা, দলীয় প্রতীক নৌকা, মুজিব শতবর্ষের লোগো, মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণের ছবি, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধুর টুঙ্গিপাড়ার বাবার বাড়ি, জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ছবি স্থান পেয়েছে ইত্যাদি। আছে সৃজনশীল একটি বুক সেলফ। সেখানে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, আমার দেখা নয়াচীনসহ তার কর্মময় জীবনের ওপরে রচিত গুরুত্বপূর্ণ বই ও বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা বই শেখ মুজিব আমার পিতা। এই জাদুঘরে ১৯২০ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘর এর দায়িত্বে- থাকা রানা মাহমুদ রাজু বলেন, বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) থেকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি দর্শনার্থীদের জন্য পার্বতীপুর স্টেশনের দক্ষিণে ওয়াশফিট ইয়ার্ড প্লাটফর্মে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। চলবে আগামী রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘরটি সকলের জন্য খোলা থাকবে।
এ্যাফেক রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক জামিল আহম্মেদ জানান, আজ বঙ্গবন্ধু শেখ ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘরে এসে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার্য জিনিসপত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। এতোদিন বইয়ে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন কর্মকা- সম্পর্কে পড়েছি। এটি রেলওয়ের একটি প্রশংসনীয় ভালো উদ্যোগ। এজন্য রেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: নুরুল ইসলাম জানান, রেলওয়ে থানার পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘরটির নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন। রেল বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকেও ভ্রাম্যমান রেল জাদুঘরে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে লোকজন দায়িত্বে রয়েছেন।