শাবান হিজরি বছরের অষ্টম মাস। এ মাস বছরের শ্রেষ্ঠ মাসসমূহের একটি। আজ মাসটির প্রথম দিন। যা মানুষের দুয়ারে পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তা পৌঁছে দেয়। আরবি শাবান শব্দের একটি অর্থ হলো মধ্যবর্তী সুস্পষ্ট। যেহেতু মাসটি রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী, তাই এই মাসকে শাবান মাস নামকরণ করা হয়। (লিসানুল আরব)
মাসটির পূর্ণ নাম হলো ‘আশ শাবানুল মুআজজম’ অর্থ মহান শাবান মাস। রমজানের আগমনী বার্তায় শাবান মাসেই মুসলমানদের মধ্যে খুশি-আনন্দের আভা ছড়িয়ে পড়ে।
শাবান মাসের বিশেষ আমল হলো বেশিবেশি নফল রোজা রাখা। মুসলমানদের কাছে মাসটি বেশি বেশি নফল রোজা রাখার মাস হিসেবে পরিচিত। কারণ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে অনেক বেশি নফল রোজা রাখতেন, যা অন্য কোনো মাসে রাখতেন না। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন-
أَنَّهُ لَمْ يَكُنْ يَصُومُ مِنَ السَّنَةِ شَهْرًا تَامًّا إِلَّا شَعْبَانَ يَصِلُهُ بِرَمَضَانَ
‘নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাস ছাড়া বছরের পূর্ণ একটি মাস কখনো রোজা রাখতেন না। তিনি রোজা অব্যাহত রেখে শাবানকে রমজানের সঙ্গে মিলাতেন।’ (আবু দাউদ ২৩৩৬)
শাবান মাসকে রমজানের প্রস্তুতিমূলক মাস বলা হয়। রমজানে রোজা রাখতে অভ্যস্ত হতে এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখা যেতে পারে। উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, ‘নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের চেয়ে বেশি রোজা কোনো মাসে রাখতেন না। তিনি পুরো শাবান মাসই রোজা রাখতেন এবং বলতেন, তোমাদের মধ্যে যতটুকু সামর্থ্য আছে ততটুকু (নফল) আমল করো, কারণ তোমরা (আমল করতে করতে) পরিশ্রান্ত হয়ে না পড়া পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা (সওয়াব) দান বন্ধ করেন না। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় নামাজ ছিল তা-ই, যা যথাযথ নিয়মে সর্বদা আদায় করা হতো, যদিও তা পরিমাণে কম হতো এবং তিনি যখন কোনো (নফল) নামাজ আদায় করতেন পরে তা অব্যাহত রাখতেন।’ (বুখারি ১৯৭০)
রমজানের আগে রজব ও শাবান মাসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর কাছে বেশি বেশি বরকত লাভের দোয়া করতেন। এই দুই মাসে তিনি এ দোয়া বেশি বেশি পড়তেন-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান
অর্থ : হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান আমাদের নসিব করুন।
বরকতময় মাস রমজান পেতে বেশি বেশি ছোট্ট এ দোয়াটিও করা যেতে পারে-
اَللهُمَّ بَلِّغْنَا رَمَضَان
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রমাদান।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’