সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিতে ছাত্রদের কেন্দ্র ফিস সোনালী সেবা প্রদানের জন্য ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করায় কালীগঞ্জ ইউএনও সহ ৭ জনের নামে মামলা করেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহাতাব উদ্দিন কলেজের সাময়িক বহিস্কৃত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান। তিনি সোমবার দুপুরে ঝিনাইদহ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ওই মামলাটি দায়ের করেন। পরে আদালত মামলাটি দুনীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহকে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে আগামী ২০/০৩/২৩ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
এ মামলায় কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনোজ কান্তি বিশ্বাস, প্রধান হিসাব রক্ষক রজব আলী, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক এ বি এম আহসানুল কবির, ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় গুলশান এভিনিউ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেম উদ্দিন, প্রধান কার্যালয়ের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখতার হোসেন ও খুলনা জোনের জোনাল হেড সাইদুর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।,
মামলার অভিেেযাগে বলা হয়েছে, গত ১৫/০২/২৩ তারিখে শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড কালীগঞ্জ শাখায় সরকারী মাহাতাব উদ্দিন কলেজের চলতি হিসাব নম্বর ৫৮৫৮ এবং ৬১২৭ থেকে চেকের মাধ্যমে বাদীর স্বাক্ষর ব্যতীত ৬ লক্ষ ৮০ হাজার ২১ টাকা উত্তোলন করেন ওই ৭ জন। যেটি অধ্যক্ষের মোবাইলে আসা এসএমএস পেয়ে তিনি জানতে পারেন। বাদীর ভার্ষ্য তার স্বাক্ষর ছাড়া টাকা তোলা হয়েছে। এবং পুনরায় একাউন্টে থাকা টাকা তুলে আত্মসাত করতে পারেন তারা। এজন্য সঠিক কারণ নির্ধারন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো: নাজিমুদ্দৌলা বাদীর নালিশী দরখাস্তের প্রেক্ষিতে ফৌজদারী কার্যবিধির ২০০ ধারামতে জবানবন্দী গ্রহন করেন। এবং ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে উপ-পরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহকে নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার বাদী মাহবুবুর রহমান জানান, কি কারণে এবং কেন আমার স্বাক্ষর ছাড়া অর্থ উত্তোলন করা হল সেটি তিনি জানেন না। অভিযুক্তরা নিজেদের যোগসাজসে এমনটি করেছে। তার স্বাক্ষর ছাড়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন করতে হলে অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রনালয় বা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশ লাগবে। যেটা অভিযুক্তদের কাছে নেই বলে তার দাবী।
এ বিষয়ে কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোজ কান্তি জানান, অত্র কলেজের অনার্স ১ম ও ২য় বর্ষের ছাত্রদের জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে কেন্দ্র ফিস সোনালী সেবা প্রদানের জন্য কলেজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছে। যা ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে জমা প্রদানও করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, কলেজের অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অভিযোগে সাময়িক বহিস্কৃত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানের নামের কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তারা টাকা উত্তোলন করেননি। অভিযোগকারী মাহবুবুর রহমান প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে মনগড়া টাকা আত্মসাৎ এর মামলা করেছেন। ফলে বিষয়টি দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের অনুমতিতেই কলেজের অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে। এই টাকা ছাত্রদের পরীক্ষার ফিস বাবদ ব্যাংকের মাধ্যমে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে প্রদান করা হয়েছে। টাকা আত্মসাতের কোন প্রশ্নই উঠে না।